নিয়ম নীতিমালার তোয়াক্কা না করেই নওগাঁয় বেশির ভাগ ইট ভাটাতে জ্বালানি হিসেবে কয়লার বদলে
ব্যবহার করছে কাঁচা গাছ। জ্বালানি হিসেবে গাছ পোড়ানোর ফলে চরম হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার
পরিবেশ। পাশাপাশি এলাকাবাসীরাও রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে পত্নীতলা উপজেলার ছালিগ্রাম
নামক স্থানে গড়ে ওঠেছে মেসার্স বি,এস,পি ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা। ইট ভাটা ঘুরে দেখা
গেছে, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এই ইট ভাটায় সরকারি আইন না মেনেই জ্বালানি হিসেবে আম, জাম,
রেন্ট্রি, কদম, জামরুল, কাঁঠাল, খেজুর, নারকেলসহ বিভিন্ন ধরনের ফলজ ও বনজ গাছ পোড়ানো হচ্ছে।
কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষি জমির মাটি। ফলে একদিকে যেমন নির্বিচারে উজাড়
হচ্ছে বন, অন্যদিকে উর্বরতা হারিয়ে চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ছে জমি। ইট ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার
ফলে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি মানুষের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, চোখ দিয়ে পানি পড়াসহ নানা ধরনের
স্বাস্থ্যের সমস্যারও আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, কাঁচা গাছ পোড়ানোর জন্য ভাটার আশ-পাশের এলাকা সব সময় বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায়
আচ্ছন্ন থাকে। ভাটায় ইট পোড়ানো ধোঁয়ায় আশে-পাশের কোন বাড়ির গাছে ফল ধরে না। এর বিষাক্ত
ধোঁয়ায় ফসলি জমির ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষেতের পাশে ইট ভাটা গড়ে ওঠায় আগের তুলনায় ফসল উৎপাদনও কমে
গিয়েছে। সরকার ফসলি জমির ওপর ইট ভাটা স্থাপন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আগামি পাঁচ বছরের
মধ্যে এসব জমি ফসল উৎপাদন শূন্যে নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইট ভাটার একজন শ্রমিক বলেন, এই ইট ভাটায় প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে
২০০ মন খড়ি পোড়ানো হয়। ইট তৈরির মাটি আসে কৃষি জমি থেকে। কয়েক বছর ধরে এই ইট ভাটায়
কাজ করছি কয়লা দিয়েই ইট পোড়ায়। সামান্য পরিমান কিছু কয়লা ভাটায় রাখা হয়ছে কিন্তু সেগুলো
মাঝে মধ্য পুড়ানো।
এ বিষয়ে ভাটার মালিক সুজন কুমার চৌধুরী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ভাটায় কয়লার
পাশাপাশি খড়ি ব্যবহার করি। আমি টাকা পয়সা, ভ্যাট ট্যাক্স দিয়েই ভাটা চালাই। গত দুই দিন আগে
রাতে ইউএনও এসে ঘুরে গিয়েছে আমার ভাটা থেকে। আমি তাদের অনুমতি নিয়েই ভাটা চালাচ্ছি।
পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুমানা আফরোজ বলেন, কখনোই কোন ইট ভাটাকে
খড়ি পুড়ানোর অনুমতি দেয়ার সুয়োগ নাই। এই ধরনের মিথ্যা তথ্য দিলে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।
তার সাহস হয় কি করে এরকম মিথ্যা তথ্য দেয়ার। আমরা তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।