শেখ মিহাদ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গরা বাজারে সরকারি জায়গায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের সওজের নোটিশ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন কার্যকর হয়নি। ওই নোটিশকে সামনে রেখে বানিজ্যের কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সওজের দপ্তরসহ স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের। নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের দুই পাশে ১৮ কিঃমিঃ (বাঙ্গরা বাজার) এ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) অধিগ্রহণকৃত ভূমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে ব্যবসা করে আসছে ভূমিদুস্যরা। ওই সরকারি জায়গায় প্রায় ৩৫০টি দোকান রয়েছে। অভিযোগ উঠে এই দোকানগুলো থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের(সওজ)কতিপয় অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজসে বাজার কমিটি প্রতিবছর কোটি টাকার নোটিশ বানিজ্য করে আসছে।
জনদূর্ভোগ লাঘব করতে যানজট নিরসনে সড়ক জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম জাকারিয়া এর স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ গত ২০২২ সালের ১৭ ই জানুয়ারি বাঙ্গরা বাজারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকল্পে দখলদারদের স্ব স্ব নামে এ নোটিশ প্রেরণ করা হয়। এক বছর পেরিয়ে গেলেও সেই নোটিশের কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জনশ্রুতি রয়েছে এ সমস্ত অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে ওই নোটিশ দেখিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে ৩০/৪০ হাজার টাকা করে তুলে নেওয়া হয়েছে।
উপজেলার বাঙ্গরা বাজারটি উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ন বানিজ্যিক এলাকা। ওই এলাকার কোম্পানিগঞ্জ-নবীনগর সড়কের দুই পাশের সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দোকানপাট গড়ে উঠায় প্রচন্ড যানযট সৃষ্টি হয়। এই সড়কটি উপজেলা শহর থেকে মুরাদনগর,কুমিল্লা,চট্রগ্রাম ও ঢাকাসহ সারাদেশে যোগযোগের একমাত্র সড়ক। এই সড়কটির যানযটের কারনে চিকিৎসা নিতে যাওয়া মুমুষরোগী, চাকুরীজীবি,ব্যবসায়ী, প্রবাসীসহ সাধারন যাত্রীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবুল আহম্মেদ বলেন,এই অঞ্চলের এই সড়কে যানযটের করনে ব্যবসায়ীক মালামাল পরিবহনে সময়ক্ষেপন হওয়ায় দিগুন ভাড়া গুনতে হয়।
নবীনগর সরকারি হাসপাতাল থেকে রের্ফাডকৃত মুমর্ষ রোগী নিয়ে যাওয়া মোঃ সফু মিয়া বলেন, মুমর্ষ অবস্থায় আমার স্ত্রীকে নিয়ে কুমিল্লা সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পথে বাঙ্গরা বাজারে যানজটে ঘন্টাধিক সময় পরে থাকতে হয়। এরকম হাজারো শ্রমজীবি মানুষদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বাঙ্গরা বাজারে সরকারি জায়গায় দখলকৃত প্রভাবশালী দোকান মালিক মোঃ নাছিম বলেন, উচ্ছেদ নোটিশ নিয়ে বাজার কমিটির লোকজন আমার দোকানে এসে উচ্ছেদ বন্ধের জন্য টাকা দাবী করলে এই নিয়ে তাদের সাথে আমার বাকবিতন্ড হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সমাজসেবক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী আবু জামালের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজার কমিটির সভাপতি নেতৃত্বে শুধু উচ্ছেদ ঠেকাতে প্রায় ৩৫০ টি দোকান থেকে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানদার জানান, উচ্ছেদ নোটিশ দিয়ে প্রতি বছর দোকান মালিকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বাজার কমিটি’র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এ ব্যাপারে বাঙ্গরা বাজার কমিটির সভাপতি মোঃ রবিউল আওয়াল রবি বাজার কমিটি’র নোটিশ বানিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,উচ্ছেদের নোটিশ এসেছিল কিন্তু তারা কেন ভাঙ্গেনা জানিনা।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, এ বিষয়টির আপডেট আমি জানি না,স্যারের সাথে আপনারা কথা বলেন প্রয়োজনে স্যারের নাম্বার দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ উচ্ছেদ ঠেকাতে কোটি টাকা বানিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অবৈধ দখলদারদের কারনে জনদুভোর্গ কাম্য নয়,স্বশরীলে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।