মো: খায়রুল ইসলাম,নরসিংদী প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিদ্যমান
পরিস্থিতিতে নরসিংদী জেলায় সংক্রমণের ঝুকি হ্রাস ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে বাজার
সমিতি, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি, গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির
জনপ্রতিনিধিদের সাথে জরুরী সভা আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নরসিংদী জেলা
প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নরসিংদী জেলা প্রশাসকের
পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কমল কুমার ঘোষ। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মুশফিকুর রহমান ও নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী
অফিসার তাছলিমা আক্তার। সভার সভাপতি বিগত সময়ে নরসিংদী জেলা করোনার
প্রাদুর্ভাব গত বছর সুন্দরভাবে আমরা মোকাবেলা করেছি। বর্তমানে কোভিডের
প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এরই মধ্যে সারা বাংলাদেশের মধ্যে নরসিংদী জেলা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ
একটি জেলা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলার মধ্যে নরসিংদী ৬ষ্ঠ
স্থানে আছে। এর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য উচ্চ পর্যায় থেকে আমাদেরকে
নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বিশেষ করে যারা বাজার, গণপরিবহন ও হোটেল ব্যবসায়ের
সাথে সম্পৃক্ত তাদের প্রতি বিশেষ সতকর্তা অবলম্বন করতে হবে।
নরসিংদী জেলার মধ্যে সদর উপজেলা সবচাইতে বেশী ঝুঁকিপূর্ণ এখানে কোভিড-১৯
রোগী রয়েছে ১ হাজার ৯শত ৭৪জন। এর মধ্যে গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে
আমাদের ১৯দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সেগুলোর গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- সকল ধরণের
জনসমাগম তথা সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় সংক্রমণযুক্ত এলাকায় নিষিদ্ধ করা হলো।
বিয়ে বা জন্মদিনসহ যে কোন ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম
নিরুৎসাহিত করতে হবে; মসজিদ সহ সকল ধর্মীয় উপসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি
পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে; পর্যটন, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল, থিয়েটার হলে
জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সকল ধরণের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে;
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী
পরিবহন করা যাবে না;-এক্ষেত্রে যাত্রী বাসে উঠার সময় সেনিটাইজার দিতে হবে এবং
অবশ্যই প্রত্যেকের মাক্স ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। মাক্স ব্যবহার কেউ না করলে তাকে বা
তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা চাইনা কেউ আইনগত ব্যবস্থার
শিকার হউক। আমরা চাই সকলেই বিধি মেনে চলুক। কারণ, মাক্স এবং সেনিটাইজার
সম্পর্কে সকলেই অবগত। এখন কেউ যদি তা ব্যবহার না করে, তাহলে ধরে নেয়া হবে
জেনেশোনেই তা পরিপালন করছে না। তখনই তার বা তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা
নেয়া হবে। সংক্রমণের উচ্চ ঝুকিপূর্ণ এলাকায় যান চলাচলও সীমিত করতে হবে। বিদেশ
থেকে আগতরা ১৪দিন নিজ খরচে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে; বাজার সওদা
তথা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা স্থানে স্বাস্থ্যবিধ মেনে ক্রয়বিক্রয় করতে
হবে, ঔষধের দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঔষধ বিক্রি নিশ্বিত করতে হবে। সকল প্রকার
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। অপ্রয়োজনীয় আড্ডা বা ঘোরাফেরা করা যাবে না এবং রাত
১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তথা অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া
যাবে না। ১৯টি নির্দেশনার মধ্যে এগুলো খুবই কঠোরভাবে পালন করতে হবে। আপনারা
যারা আজকে উপস্থিত হয়েছেন, আপনাদের মাধ্যমে সকলের কাছে যার যার অবস্থান থেকে
মানুষকে সচেতন করতে হবে-তবেই আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা আমাদের
জন্য সহজ হবে। সংক্রমণ বৃদ্ধি রোধ হবে।