দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক রিপোর্ট : দেশগুলোতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতাগ্রহণ নতুন কিছু নয়। সাবেক ফরাসি উপনিবেশ নাইজারেও সেনা অভ্যুত্থানের আলাদা কোনো তাত্পর্য ছিল না। কয়েকটি কারণে এই ঘটনা বাইরের দুনিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ নিয়ে রাশিয়া ও ফ্রান্স ইতিমধ্যেই অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে। ফ্রান্সের সঙ্গে আছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো। অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গে লাইন আপ হতে পারে চীন ও তুরস্কের। নাইজার ১৯৬০ সালে স্বাধীনতা লাভ করলেও এই পর্যন্ত কেবল দুটো সরকারই ছিল জনগণের ভোটে নির্বাচিত। যার মধ্যে সর্বশেষ ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুম। ইকোয়াস তার কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার যে ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিল তা ৬ আগস্ট পার হয়ে যায়। কিন্তু জান্তা প্রধানের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না। বরং জনগণের মধ্যে ফরাসি বিরোধী তুঙ্গে থাকায় তার সুফল পাচ্ছে সামরিক সরকার।
জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ৭৫ শতাংশের ওপর মানুষ এখন ফ্রান্সবিরোধী। সাধারণ মানুষ মনে করে, বিদেশিরা আসে কেবল সম্পদ লুণ্ঠন করতে। নিকটবর্তী লিবিয়ার অভিজ্ঞতা থেকে এটি পরিষ্কার। গোষ্ঠীসংঘাত থামাতে সেখানে পশ্চিমা দেশগুলো সৈন্য পাঠালেও তারা সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি বা করেনি। তারা উলটো লিবিয়ার প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। নাইজারবাসী আশঙ্কা করছে, পশ্চিমা দেশগুলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত তাদের খনিজ সম্পদ দখলে নিয়ে নিতে পারে।
জান্তা প্রধান জেনারেল আবদুররহমানে টিচিয়ানি এরই মধ্যে সাবেক সরকারের অর্থমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ আলী লামিনে জেইনকে প্রধান করে একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। টিচিয়ানি ২৬ জুলাই নিজেকে প্রেসিডেন্ট বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত বাজুমের নিরাপত্তা ইউনিটের প্রধান। নাইজারের জান্তা বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের সঙ্গে করা পাঁচটি সামরিক ও নিরাপত্তা চুক্তি বাতিল করে। ১৯৭৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চুক্তিগুলো করা হয়েছিল। পার্শ্ববর্তী মালি ও বুরকিনা ফাসোতে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পরও একই পদক্ষেপ নিয়েছিল। ঐ দুটি দেশ থেকে ফরাসি সৈন্যদেরও বিতাড়িত করা হয়েছে। তবে নাইজারে এখনো এক থেকে দেড় হাজার ফরাসি সৈন্য রয়ে গেছে। সাহারা ও সাবসাহারান অঞ্চলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের জন্য কয়েক বছর আগে ফ্রান্স ঐ দেশগুলোতে সৈন্য পাঠায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স নাইজারের নতুন শাসককে স্বীকৃতি দেয়নি। ইইউ নাইজারের সঙ্গে নিরাপত্তা ও আর্থিক সহযোগিতা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে। আফ্রিকান ইউনিয়নও অনুরূপ পদক্ষেপ নিয়েছে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]