পলাশ, সারিয়াকান্দি বগুড়া প্রতিনিধি দৈনিক৷ শিরোমণিঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দি যমুনা নদীর নাব্যতা ভয়াবহভাবে হ্রাস পেয়েছে। নাব্যতা সংকটের কারণে সদরের পৌর এলাকার কালিতলা নৌ-ঘাট থেকে ৪টি আন্তঃ জেলা নৌ-রুট বন্ধ হয়েছে। এজন্য যাত্রী সাধারণ চরম দুর্ভোগের কবলে পরেছেন। স্থানীয়রা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার উপর দিয়ে ৪১ কিলোমিটার যমুনা নদী প্রবাহমান। সম্প্রতি বছরগুলোতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানির সাথে বালু, পলি ও কাদা মাটি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ভরাটের কারণে নাব্যতা অনেকাংশে কমে গেছে। যে কারণে ভারী জাহাজ ও পণ্য পরিবহণের জন্য কার্গো সার্ভিস বন্ধ রয়েছে বহু বছর আগে থেকেই। যে কারণে নৌ-রুটটি দিয়ে উজানের চিলমারী, কুড়িগ্রাম, রৌমারী ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন স্থানে স্বল্প খরচে পণ্য পরিবহণ চলতো তা অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবহণ সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার লোক বেকার হয়ে পরেছেন। এছাড়াও সড়কপথে ওইসহ পণ্য পরিবহণে চার/পাঁচ গুণ খরচ গুণতে হচ্ছে উজানের জেলাগুলোর জনগণের। এদিকে এরই মধ্যেই সারিয়াকান্দির আন্তঃজেলা নৌ-রুট কালিতলা, জামালপুরের মাদারগঞ্জ, ইসলামপুরের গুটাইল, উখিয়া, মাইজবাড়ী ও গাইবান্ধার সাঘাটা নৌ-রুট বন্ধ রয়েছে গত ৮দিন হলো। তবে সারিয়াকান্দির ৫ কিলোমিটার ভাঁটিতে কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নে মথুরাপাড়া নামক স্থান থেকে নৌ-রুটটি যথারীতি চালু রয়েছে। তবে নৌ-রুটটি চালু থাকলেও এখানে নৌ চলাচল করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে মাঝি-মাল্লাদের। মাঝি-মাল্লারা বলছেন, ১ ঘন্টার পথ ২ ঘন্টাতেও শেষ হতে চাইছে না। তারা আরও বলেন, মাঝে মধ্যে নৌকা ডুবো চরে আটকা পড়ে দুর্ভোগের শেষ থাকছে না। নৌকার মাঝি সাহাম্মত ও সুজাইল ইসলাম বলেন, কি করবো আমরা, নদীর তলায়তো পানি নেই। ডুবো চরে যখন যাত্রী বাহী নৌকা আটকে যায়, তখন আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকেনা। পথ চলতে নৌ-পথে একাধিকবার নৌকা আটকে যাচ্ছে। কাজলা ইউনিয়নের জামথল চরের রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীতে নৌকা ঠিকমতো চলছেনা। এজন্য কৃষি পণ্যের আমরা ন্যায্য দাম পাচ্ছিনা। তারপরও বহু কষ্টে কৃষি পণ্য আনা-নেওয়া করছি। এতে আমাদের দুর্ভোগ ও খরচ উভয়ই বেড়েছে। এবিষয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এস.ডি.ই) আবদুর রহমান তাসকিয়া বলেন, যমুনা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষাকালে উভয় তীরে সহজেই বন্যার দেখা দিচ্ছে আবার শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় নৌ-যান চলছেনা। এতে উভয় সময়েই স্থানীয়রা দুর্ভোগে পরছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তোরনের জন্য সরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এতে ২১’শ শতাব্দির মধ্যে নদীকে পরিকল্পীতভাবে ড্রেজিং করে যমুনা নদীকে আশীর্বাদ হিসেবে পরিণিত করা হবে।
৭ views