জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ এবং জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১-এর আলোকে ২৯ জুন ২০২২ ‘ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন’ নির্দেশিকা জারি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, নির্দেশিকা জারির ৯০ দিন অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২-এর মধ্যে ডিবিআইডি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। এতে প্রতীয়মান হয়, ডিবিআইডি ছাড়া বিদ্যমান ই-কমার্স উদ্যোক্তারা অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। নতুন উদ্যোক্তাকে ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ চালু করে আবেদন করতে হবে। ডিবিআইডি নম্বরটি হবে ইউনিক ও অটো-জেনারেটেড।গতকাল অনলাইনে ‘ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন’ কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। কর্মশালার আয়োজন করে এসএমই ফাউন্ডেশন। ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান এবং গেস্ট অব অনার ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান।তিনি বলেন, ডিবিআইডি নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এজন্য আবেদনকারীকে এনআইডি দাখিল করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও আরজেএসসি নিবন্ধন নম্বর থাকলে দাখিল করতে হবে। সেই সঙ্গে ভ্যাট নিবন্ধন ও ইটিআইএন থাকলে সেগুলোও দাখিল করতে হবে। ভাড়া অফিস হলে বাড়ি ভাড়ার চুক্তি ও বাড়ির মালিকের এনআইডির কপি দিতে হবে। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে এমএলএম বা নেটওয়ার্কিং ব্যবসা, নেশা সামগ্রী, বিস্ফোরক সামগ্রী এবং জুয়া, অনলাইন বেটিং বা গেম্বলিং প্রতিষ্ঠান ডিবিআইডির জন্য আবেদন করতে পারবে নাডিবিআইডি নম্বর বাধ্যতামূলকভাবে ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজে প্রদর্শন করতে হবে। কোনো কারণে ডিবিআইডি বাতিল হলে সেটি প্রদর্শন করা যাবে না। ডিবিআইডি নিতে ভুল তথ্য দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল পুরো বিষয়টি তদারকি করবে। এছাড়া ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট ও বিএফআইইউ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তদারকি করতে পারবে।
https://roc.gov.bd/ ওয়েবসাইটে লগ ইন করে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ’-এর দপ্তরে ডিবিআইডির জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান বলেন, দেশে আড়াই হাজারের বেশি ওয়েবসাইট এবং প্রায় ৩ লাখের কাছাকাছি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে, যাদের বেশির ভাগ নারী-উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, সব ব্যবসাকে একটি ডেটাবেজের আওতায় আনার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পক্ষে ট্রেড লাইসেন্স, আরজেএসসি নিবন্ধন, ইটিআইএন বা ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া সম্ভব হয় না। সে কারণে ডিবিআইডি থাকলে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন সহজ হবে।তিনি আরও বলেন, এক বছর পর্যন্ত বিনা মূল্যে নিবন্ধন করা যাবে। এরপর থেকে নিবন্ধন ফি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, যেসব উদ্যোক্তা আইন মেনে ব্যবসা করতে চান, তাদের জন্য ডিবিআইডি নিবন্ধনের এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। ডিবিআইডি নিবন্ধনের এ সুবিধা গ্রহণ করতে সব এসএমই উদ্যোক্তার প্রতি আহ্বান জানান।