মো জহুরুল ইসলাম নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ
নীলফামারীতে নিজ বাড়িতে গৃহকর্তা হত্যা ঘটনার জট খুলেছে। অন্যকে ফাঁসাতে স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫০) তার স্বামী হোসেন আলী যাদুকে (৫৫) হত্যা করেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে তার বড় ছেলে মতিয়ার রহমান (২৭)। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাড়ি বিক্রি করে টাকা বুঝে নেওয়ার পর ওই টাকা আত্মসাৎ এবং বাড়ি ক্রেতাকে হত্যা মামলায় ফাঁসানো। আজ রবিবার সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে হত্যার শিকার হোসেন আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ওই এলাকার মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে। লাশ উদ্ধারের পর হত্যা রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করলেও একপর্যায়ে পুলিশের কাছে ওই হত্যার দায় স্বীকার করে তারা।পুলিশ জানায়, সম্প্রতি প্রতিবেশী শাহিনুর আলমের কাছে সাড়ে ৯ লাখ টাকায় হোসেন আলী তার বাড়িটি বিক্রি করেন। বাড়ি এবং জমি ক্রেতা টাকা বুঝে দিলেও বাড়িটি রেজিস্ট্রি হয়নি এখনও। ক্রেতা শাহিনুর আলমকে ওই বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল গত শনিবার।
ক্রেতাকে বাড়ি ছেড়ে না দিয়ে টাকা আত্মসাতের লক্ষ্যে হোসেন আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম, বড় ছেলে মতিয়ার রহমান পরামর্শ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হোসেন আলীর বাম হাত বিচ্ছিন্ন করে (কনুই থেকে) ঘরের বারান্দায় ফেলে রাখেন তারা। এরপর রক্তক্ষরণে হোসেন আলীর মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকায় প্রচারণা চালায় তারা। ওই হত্যাকাণ্ড এবং ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের পুরো বিষয়টির নেতৃত্ব দেন হোসেন আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম। তিনি নিজেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটেন স্বামীর হাত।গতকাল শনিবার ভোরে জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। নীলফামারী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ-উন নবী বলেন, ঘটনাটিতে ধোঁয়াশা তৈরি করে রেখেছিল পরিবারের সদস্যরা। এরপর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে রহস্য বেরিয়ে আসে। তারা ওই বাড়ির ক্রেতাকে বঞ্চিত করে টাকা আত্মৎসাতের উদ্দেশ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই আলাল হোসেন (৪৫) বাদী হয়ে নীলফামারী সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২১ views