নূর মোহাম্মদ সুমন, নীলফামারী প্রতিনিধি:ভূট্রার বাম্পার ফলন হওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ভূট্রাচাষীদের চোখে মুখে খুশির ঝিলিক দেখা গেছে। চাষের লক্ষমাত্রা অর্জনে মাঠের ফসলের সবুজ আভা কৃষকসহ কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের চেহারাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। আনন্দিত মনে ভূট্রা চাষে মেতেছে পুরো উপজেলা। বাড়ি বাড়ি চলছে ভূট্রা চাষের মহোৎসব। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ডিমলা উপজেলায় ভূট্রা আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৩ শত ৫৮ হেক্টর জমি। গতবছর ছিল ১৩ হাজার ১ শত ৫০ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বর্তমান ভূট্রা চাষ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২ শত ৫০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় অত্যন্ত ভূট্রার গাছগুলোর চেহারা ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ জমির আগাছা পরিষ্কার ও পানি সেচের কাজ সম্পন্ন করেছে ভূট্রা আবাদকারী কৃষকরা। গতবছরের তুলনায় এবার আশানুরূপ ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে তারা আশাবাদি।
উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী, নাউতারা, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, এখনও মাঠজুড়ে নানা কাজে ব্যস্ত কৃষি শ্রমিকরা। কেউ ভূট্রার গাছে কীটনাশক স্প্রে করছেন, কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউবা আবার সার ছিটিয়ে ভূট্রাক্ষেতে সেচ দেওয়ার কাজে ব্যস্ত বাড়ির নারী-পুরুষ এবং দিনমজুররা। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়েও ভূট্রার ভালো চাষ হয়েছে ডিমলায়। এখন আমরা ভূট্রার গাছের পাতা ও আগাছা পরিষ্কার করছি তবে গাছের পাতা ও চেহারা দেখে মনে হয় কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দিলে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি ফলন পাব ও ন্যায্য বাজারমূল্য পাব। এবার ভূট্রা বেঁচে খরচ তোলার পরও বেশ লাভ হবে। এতে আমাদের অর্থের চাহিদা ও সংসারের অভাব অনেকটাই দূর হবে।
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষিবিদ) সেকেন্দার আলী বলেন, একদিকে আবহাওয়া অনুকুলে ছিল। তার উপর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগীতা করায় সঠিক সময়ে ভূট্রার বীজ বপন, পরিচর্যা, বালাই নাশক ব্যবহার করায় বাম্পার ফলনে সম্ভব রয়েছে। তিনি বলেন, দেশে ভূট্রার প্রচুর চাহিদা রয়েছে, বিভিন্ন পল্ট্রি খামারে এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। ভূট্রা চাষে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন এতে দিনদিন ভূট্রা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এবার অতিরিক্ত বৃষ্টি না হওয়ায় পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেক কম হয়েছে। ফলে ফসল নষ্ট হয়নি। বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ না এলে পুরো ভূট্রাই কৃষক ক্ষেত থেকে ঘরে তুলতে পারবেন। আমরা সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মাঠদিবস, উঠান বৈঠক করে ব্যাপকভাবে কার্যক্রম চালিয়েছি। সবমিলিয়ে চলতি মৌসুমে ভূট্রার আবাদ খুব ভালো হবে বলে তিনি আশাবাদি।