সরেজমিনে দেখা গিয়ে গেছে, কর্মসূচিতে নুসরাত হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের স্বজনরা রাস্তায় গড়িয়ে গড়িয়ে আহাজারী করলে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামছুল আরেফিন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিন গনি, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুর নবী লিটন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব, পৌর কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন নয়ন, সোনাগাজী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহ জাহান, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনের ভাই নুর হোসেন, আবদুল কাদেরের বাবা আবুল কাশেম, জাবেদ হোসেনের বাবা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ, কামরুন নাহার মনির মা নুর নাহার, উম্মে সুলতানা পপির মা হোসনে আরা বেগম, আফসার উদ্দিনের স্ত্রী সুরাইয়া হোসেন, ইফতেখার হোসেনের মা হাজেরা খাতুন, মো: শাকিলের বাবা রুহুল আমিন, মাকসুদ আলমের ছেলে মো: বিজয় সহ এলাকার আরো বহু জনসাধারণের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্যকালে আসামির স্বজনরা বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী ন্যায়বিচার করতে বললেও পিবিআই স্থানীয় রাজনৈতিক বিভাজনকে কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যায় রূপান্তর করে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলমসহ ১৬ জন নিরাপরাধ ব্যাক্তিকে ফাঁসির আসামি বানিয়েছে। এছাড়া পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের ঘুষ বাণিজ্য, আসামি আফসার উদ্দিনের কাছে নুসরাতের আত্মহত্যা করবে বলে পাঠানো এসএমএস ও ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ গায়েব, গ্রেফতারকৃতদেরকে বৈদ্যুতিক শর্ট, ড্রিল মেশিন ব্যবহার এবং বিবস্ত্র করার হুমকি দিয়েছে বলে ও উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল মাদরাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে নুসরাস রহস্যজনক উপায়ে অগ্নিদগ্ধ হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। একই বছরের ২৪ অক্টোবর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ মামলার রায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। বর্তমানে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি কারাগারে রয়েছেন।