মিশকাতুজ্জামান,নড়াইল প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ ভোর থেকে বেচাকেনা জমে ওঠে নড়াইলের পলাইডাঙ্গা এলাকার ভদ্রবিলা পাইকাড়ি বাঁশের হাটে। করোনার মধ্যেও থেমে নেই হাটের বেচাকেনা। ভালোমানের বাঁশের জন্য প্রসিদ্ধ অর্ধশতাব্দীর পুরনো, জেলার একমাত্র পাইকাড়ি এ বাঁশের হাট সপ্তাহে এক দিন বসে। যেখানে কাংক্ষিত দামে কেনাবেচা করতে পেরে খুশি ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই। হাটের বিদ্ধমান সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে যত্নবান জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী সবাই।সপ্তাহের প্রতি রোববার সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের পলাইডাঙ্গা গ্রামে চিত্রা নদীর পাড়ে মনোরম পরিবেশে বসে বাঁশের হাট। নদী কেন্দ্রিক এ হাট উপলক্ষে দুদিন আগে থেকেই বাঁশ আমদানি শুরু হয়। নড়াইল জেলা ছাড়াও বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা নিজেদের এলাকায় থেকে বাঁশ কিনে এ হাটে তোলেন।রোববার ভোর থেকেই কেনাবেচা শুরু হয় সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কেনাবেচা চলে। আকার ভেদে প্রতি ১০০টি বাঁশ সর্বোচ্চ ২৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এ ছাড়াও ঝুঁড়ি, ঝাঁকা, চালুনসহ বাঁশের নানা সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত তল্লা প্রজাতির বাঁশ ৫-৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। কম খরচে স্বাচ্ছন্দে পরিবহন করা যায় বলে ৯০ ভাগ বাঁশ নদীপথে আনা নেওয়া করা হয়। হাটের মনোরম ও সুষ্ঠু পরিবেশে কেনাবেচা করতে পেরে খুশি ফঁড়িয়া পাইকার উভয়ই।ভদ্রবিলা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. রেজাউল শেখ বলেন, এই হাট পরিচালনায় ও সুষ্ঠু পরিবেশে বজায় রাখতে আমরা জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় জনগণ আন্তরিক চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগামীতেও যাতে এই হাট সুন্দরভাবে চলে আমাদের সবার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। খাজনামুক্ত এ হাটে গড়ে অন্তত ৩০ লাখ টাকার বাঁশ বেচাকেনা হয়। ভালোমান ও দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, গোপালঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে পাইকাররা এখান থেকে বাঁশ কিনে নিয়ে নিজ এলাকায় বিক্রি করে।বাঁশ ব্যবসায়ী সলেমান শিকদার বলেন, আমার বাবা এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে বাঁশের ব্যবসা করতেন। এখন বাবা নেই, আমি প্রায় ছয় বছর ধরে এ ব্যবসা করে আসছি। সপ্তাহের সোম থেকে শনিবার পর্যন্ত আমি নড়াইলের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাঁশ কিনে এনে রোববার হাটে বিক্রি করি।খুলনা থেকে আসা ব্যবসায়ী হোসেন ব্যাপারী বলেন, আমি ১২ বছর ধরে এই হাট থেকে পাইকারি বাঁশ কিনে ট্রলারে করে খুলনায় নিয়ে খুচরা বিক্রি করি। প্রতিটা ট্রলারে ৩শ থেকে ৪শ বাঁশ পরিবহন করা যায়। পানিপথে পরিবহন করায় স্বল্প খরচে অধিক লাভ করতে পারি। আকার ভেদে প্রতিটি বাঁশ খুলনায় সর্বনিম্ন ১৭৫ টাকা থেকে ৪০০ টাকা বিক্রি করি।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপপরিচালক দিপক কুমার রায় বলেন, নড়াইলের মাটি বাঁশ চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত হওয়ায় এখানে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়ে থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাঁশের চাষ শুরু করেছেন। আমরা বিভিন্নভাবে তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি।
২১ views