মোরশেদ আলম,পটিয়া (প্রতিনিধি),দৈনিক শিরোমণিঃ মহামারী করোনা রোধে সারাদেশে
সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ২ সপ্তাহ লকডাউনের সুযোগে পটিয়া উপজেলায়
আবারও চলছে দিনে ও রাতের আঁধারে চাষাবাদের কৃষি জমি ও পাহাড় থেকে মাটি
কাটার মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পটিয়ার
কচুয়াই-খরনা লালারখীলে সিন্ডিকেট প্রধান আবুদর রহিম (সও:) ও সান্টুর নেতৃত্বে
৫০ জনের একটি সিন্ডিকেট রাত দিন এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটছে। এতে
তাঁরা মাটির ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। জনশ্রুতি রয়েছে
রাতে ডিউটিরত থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে নিবির্চারে পটিয়ার পূর্ব পাহাড়
লালারখীল খরনা, কচুয়াই, উত্তর শ্রীমাই, মুরাদাবাদ, লড শ্রীমাই, পটিয়ার কাঞ্চনগর
চাবাগান এলাকাই কৃষি জমি ও পাহাড় কাটা জমজমাট ভাবে চালিয়ে আসলেও
রহস্যজনক কারনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নিরব
ভূমিকা পালন করছে। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রে জানা
যায়, মাটিকাটা চক্রটি প্রতিদিন পাহাড় ও ফসলি জমি থেকে জমির টপসয়েল
(জমির উপরি ভাগের উর্বর অংশ) কেটে নিচ্ছে। এ মাটি কাটার ফলে পাহাড়ী
বনভূমি যেমন ধ্বংস হচ্ছে তেমনি কৃষি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে।
তাছাড়া ইটভাটা, বসতভিটা ও পুকুর ভরাট কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এসব মাটি।
প্রধানমন্ত্রী ও ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুগুলি দেখিয়ে এক শ্রেণির দালাল ফসলি জমির
টপ সয়েল কেটে উজাড় করছে। এর ফলে এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি
কৃষি উৎপাদন ও ফসল জৈব বৈচিত্র মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে। এর
ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের সরকার নিরলস কাজ করে গেলেও ভুমি খেকোদের ভয়াল
থাবায় পরিবেশে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ
সামশুল হক চৌধুরীর প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিলেও তা উপেক্ষা করে ধানি
জমি থেকে টপ সয়েল কাটার কাজ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশ
মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান চালালেও কার্যকর কোন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া
হয়নি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার কচুয়াই ও খরনা পাহাড়ী এলাকা,
লালরখীল, শহীদ শাহ আলম স্কুলের পাশ্ব থেকে আব্দুর রহিম (সও:), মো. সান্টু কাঞ্চনগর
চাবাগান (পটিয়া অংশ) থেকে, মো. জামাল, আবদুর রউপ, মো. রহিম, দেলোয়ার,
ইমরান, মো. মোজাম্মেল সহ ৫০ জনের একটি সিন্ডিকেট রাত দিন এস্কেভেটর
দিয়ে মাটি কাটছে। এছাড়াও হাইদগাঁও সাতগাউছিয়া মাজারের পূর্বে,
হাইদগাঁও জিয়ারপাড়া, হাইদগাঁও দিঘির পাড় কালীবাড়ি এলাকা, গুচ্ছগ্রাম,
কেলিশহর মডেল টাউন, খিল্লাপাড়া, ছত্তারপেটুয়া, নাগাটা বিল, মা ফাতেমা
মাজারের পাশে, রতনপুর বড়–য়ার টেকের গোয়ালপাড়া, মৌলভী হাট হয়রত আবদুল
কাদের জিলানী (রা:) মাজারের পাশে, বরলিয়া, ধলঘাট প্রবাহ স্টোরসহ ইউনিয়নের
বিভিন্ন এলাকায় প্রতিটি পয়ন্টে ২০/৩০ লোক ও এস্কেভেটর দিয়ে কৃষি জমিতে
মাটি কেটে ট্রাক, ড্রাম, মিনি পিকআপ ও ট্রলি ভর্তি করে উজার করছে এ
অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাটি কাটার গভীরতার পরিমাণ ১০
থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে কোথাও কোথাও অর্থনৈতিক ও
অনৈতিক আগ্রাসনে পার্শ্ববর্তী মালিকের জমিও নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে পটিয়া
উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) নিলুফা ইয়াছমিন
বলেন, মাটি কাটার বিষয়ে শুনেছি। যে বা যারা এই মাটি কাটার সাথে সম্পৃক্ত
তাদের কে আইনের আওতায় আনা হবে। পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার
জানান,যেখানে মাটি কাটার খবর পাচ্ছি সেখান থেকে গাড়ি আটক করছি।
তবে কোথায় মাটি কাটছে জানা নাই সঠিক তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বর্তমানে লকডাউনের সুযোগের সেই সিন্ডিকেট ফসলি জমি ও পাহাড় থেকে
টপ সয়েল কেটে উজাড় করছে।