শিরোমনি ডেস্ক রিপোর্ট: যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভিড় জমেছে ভ্রমণপিপাসুদের। বিনোদন ও প্রকৃতি দর্শনের সুযোগ রয়েছে এসব জায়গায়। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, একাদশ শিব মন্দির, ভাটপাড়া ইকোপার্ক, বাশুয়াড়ী খানজাহান আলী দীঘি, ভৈরব সেতু, পুড়াখালি বাওড়, প্রেমবাগ বাওড়, প্রেমবাগ রূপ-সনাতন আদি ধাম ও সুন্দলী রামসরা স্মৃতিতীর্থ ধাম, ভবদহ গেট, ভবদহ কলেজ ইকো গার্ডেন, নওয়াপাড়া ওয়াকওয়েসহ অভয়নগরের অর্ধডজন পিকনিক স্পট ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। এগুলো দর্শনার্থীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত ও ভ্রমণ উপযোগী। এরজন্য কারও গুনতে হয় না পকেটের টাকা। অভয়নগরকে দ্বিখন্ডিত করে দীর্ঘ ১৫ কিলোমিটার নৌপথও এখন নৌকা ও ট্রলারযোগে ভ্রমণের পথকে সুগম করেছে। রং-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে নৌকা ও ট্রলার সাজিয়ে ভ্রমণবিলাসীরা সকাল বিকাল সন্ধ্যা কাটাচ্ছেন। নওয়াপাড়া থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে ভৈরব নদের উত্তর পাড়ে বাঘুটিয়া ইউনিয়নে রয়েছে তিনশ’ বছরের পুরনো একাদশ শিব মন্দির। ১১টি মন্দির ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে এখানে। অভয়া না¤œী রাজ তনয়ার ইতিহাস জড়িয়ে আছে একাদশ শিব মন্দিরের সঙ্গে। ১১১ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে প্রেমবাগ বাঁওড়। বিশাল জলরাশী, মাঝে মাঝে দ্বীপের মতো বনভূমি, মনোলোভা দৃশ্য কার না মন ভোলায়! এরই মাঝে আছে ইতিহাস ও ধর্মীয় ঐতিহ্যমাখা রূপ সনাতনের সাধন ভজনের কচাতলা। তীর্থ দর্শনের মত এর গুরুত্ব রযেছে ভক্তদের কাছে। ভৈরব সেতু পার হয়ে দেয়াপাড়া গ্রামের মাঝে রয়েছে পুড়াখালীর বিশাল বাওড়। ৫৪ একর জলাশয়ের মধ্যে ফুটে আছে পদ্ধ ফুল, আছে বিশার তার বাহারী পাতা। পাখির কলরব আর দখিনা বাতাসে ভ্রমণবিলাসীরা খুঁজে পান আনন্দ। সূর্যোদয় ও সূর্য ডোবার দৃশ্য দেখার আনন্দটাই আলাদা। অভয়নগরের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের বাশুয়াড়ী পীর খানজাহান আলী দিঘি ও মসজিদ। বাগেরহাট পীর খানজাহান আলীর দরবার ও দীঘি দেখার পর এখানে মানুষ ছুটে আসে। শ্রীনদীর বাঁকে গড়ে ওঠা ভবদহ কলেজের ৩৪ একর জমিতে বেড়ে উঠেছে নানা রঙের ফুল-ফলের গাছ। নদীর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন বসার স্থান রয়েছে। বাতাসে ম ম গন্ধ। আম-কাঁঠালের মুকুল আর কৃষ্ণচূড়া ফুলের সমাহার ভবদহ কলেজ ক্যাম্পাসকে করেছে আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন। একাদশ শিব মন্দিরের ২০০ গজ দূরে ভাটপাড়া ইকোপার্ক অভয়নগরের অন্যতম আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট। ভৈরব নদীর কূল ঘেঁষে বাণিজ্যিকভিত্তিতে গড়ে এই পার্কটিতে রয়েছে সাদাপরী, উট, বাঘ, কুমির, হরিণ, বানরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণীর ভাস্কর্য। এ ছাড়া চিত্তবিনোদনের জন্য সব ব্যবস্থা রয়েছে। ভৈরব নদের ওপর সদ্য নির্মিত ব্রিজ এখন দর্শনার্থীদের কাছে অতি আকর্ষণীয়। ব্রিজ দিয়ে পুড়াখালী বাঁওড়ে যাওয়া খুবই সহজ। অভয়নগরের অর্ধডজন পিকনিক স্পট ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পর্যটন শিল্প হিসেবে গড়ে তুললে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বৃদ্ধি পাবে, সেই সঙ্গে দেশবাসী চিত্তবিনোদনের সুযোগ পাবেন।