পাবনা প্রতিনিধি
প্রেমিকের বদলে অন্যজনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করায় অভিমান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত সোমবার দুপুরে পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার কন্দর্পপুর এক ভাড়াবাড়িতে আত্মহত্যা করেন তিনি।
প্রয়াত ফারিয়া তাবাসসুম রুম্পা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থবর্ষের ছাত্রী ছিলেন, থাকতেন ঢাবির শামসুন্নাহার হলে।
পাবনার ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের বাবুলচরা গ্রামের ফরিদ উদ্দিন মন্ডলের মেয়ে তিনি। ফরিদ উদ্দিন সরকারি চাকরিজীবী।
এক সপ্তাহ আগে নিহতের ভাই সোনালী ব্যাংক আটঘরিয়ায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগ দেন। মৃত্যুর আগে আটঘরিয়ার কন্দর্পপুরে তার এ ভাইয়ের সাথে ভাড়া বাসায় ছিলেন ফারিয়া।
আটঘরিয়া থানার ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, রুম্পা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
পরিবারের লোকজন টের পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রুম্পার বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় এ ঘটনায় ইউডি মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
নিহতের সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠজনরা জানায়, পছন্দের ছেলেকে বাদ দিয়ে অন্যের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ায় গত সোমবার দুপুরে তার ভাইয়ের ভাড়া করা বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রূম্পা।
রুম্পার সহপাঠী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,রুম্পা খুবই মার্জিত, ভদ্র, মেধাবী এবং প্রচণ্ড রকমের ধার্মিক ছিল। আমরা চার বছর রুম্পার সাথে ক্লাস করেছি কিন্তু একদিনও কোনো ছেলেই তার চেহারা দেখেনি।
তার আত্মহত্যার খবর শুনে আমরা নিশ্চিত হতে পারছিলাম না, এই মেয়ে আসলেই রুম্পা কিনা। কারণ কেউই তাকে দেখেনি।
হাসনাত বলেন, ক্লাস সেভেন থেকে রুম্পার সাথে একটি ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রুম্পার সাথে যে ছেলের সম্পর্ক ছিল সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হওয়ায় রুম্পার পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এটা নিয়েই পরিবারে দ্বন্দ্ব চলছিল।
হয়তো জোর করেই অন্যত্র বিয়ে দিতে চেয়েছিল পরিবার। আর সে কারণেই রুম্পা আত্মহত্যা করতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দিয়েছি। এ ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।
তবে নিহত রুম্পার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।