ওয়াজেদ আলী, বিশেষ প্রতিনিধি: কোর্টের গেটে বৃদ্ধর চোখে পানি দেখে কি হয়েছে জানতে চাইলে মৃত ছেলের ছবি বুকে ধরা পিতার আর্ত্বনাদ, আমার ছেলে আত্মহত্যা করে নাই আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের মৃত্যুর আসল রহস্য উম্মোচন ও মামলা তদন্ত করা হোক বলেই কেদে ফেলেন ।
গাইবান্ধা জেলার গাইবান্ধা সদর থানাধীন ৩নং কুপতলা ইউনিয়ন পরিষদের অন্তরগত চাপাদহ মধ্য পাড়া (পাচজুমা) গ্রামের মৃত নুরুল হকের পুত্র হাজী মোঃ নজরুল ইসলামের বাড়ি থেকে ২৬/০৪/২০২১ তারিখে নাটোর জেলার বাঘাতিপাড়া থানার নাজিরপুর গ্রামের মোঃ বদর উদ্দিন,পুত্র মোঃ রাকিবুল হাসান(৩১) (চাপদহ (পাঁচজুমা) ব্রাক অফিসে কর্মরত ব্রাককর্মীর)গলায় ওরনা দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করিয়া পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। মৃত- রাকিবুল হাসান (৩১), গত ইং ০২/০৭/২০১৭ তারিখ, ব্রাক পাঁচজুম্মা বাজার শাখায়, ক্রেডিট অফিসার পদে যোগদান করেন, যোগদানের পর থেকে পাঁচজুম্মা বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বের এলাকায় ক্রেডিট অফিসার পদে দায়িত্ব পালন করিয়া আসিতেছিল, দায়িত্ব পালন কালে তিনি গ্রাহকগণের নিকট হইতে টাকা কালেকশন করিতেন। চাকুরী করা কালে অনুমান ৪ বছর যাবৎ হাজী মোঃ নজরুল ইসলামের বাড়িতে বাসা ভাড়া করিয়া থাকিতো মৃত- রাকিবুল হাসান (৩১)।
মৃত- রাকিবুল হাসান (৩১) এর পিতা বদর উদ্দিনের আর্ত্বনাদ, পিতার সহিত পূত্রের গত ইং ২৫/০৪/২১ তারিখে ইফতারির পরে পুত্রের মোবাইল ফোনে কুশল বিনিময় ও কথোপকথন হয় আর পরের দিন গত ইং ২৬/০৪/২১ তারিখ সকাল অনুমান ৭ঃ০০ ঘটিকায় আমার পুত্রের ব্যবহৃত ০১৭১০- নং মোবাইল ফোন হইতে মোঃ খবির উদ্দিন আমাকে জানায় যে, আমার পুত্র সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত। দুর্ঘটনার সংবাদ পাইয়া মোঃ শিমুল ও মোঃ আব্দুস সালাম এবং পুত্র বধু রাবেয়া খাতুন ও নাবালক নাতি রায়হানুল হাসান রাফিকে সঙ্গে নিয়া মাইক্রোযোগে রওনা দিলে পথিমধ্যে আমাকে পুনরায় মোবাইল ফোনে গাইবান্ধা সদর থানায় যাওয়ার জন্য বলিলে আমার সঙ্গীয় লোকজন সহ গাইবান্ধা থানায় বেলা অনুমান ২.০০ ঘটিকার পরে পৌঁছিলে থানা কর্তৃপক্ষ আমাকে বলে যে, আপনার পুত্র মোঃ রাকিবুল হাসানের লাশ ময়না তদন্ত করিতে হইবে বলিয়া আমার ও আমার শ্যালক আব্দুস সালাম এর নিকট হতে কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার পরও আমার পুত্রের মৃতদেহ দেখিতে দেয় নাই।
সঙ্গীয় লোকজন সহ আমি পুত্রের ভাড়া বাড়ির মালিক মোঃ নজরুল ইসলামের চাপাদহ মধ্য পাড়া সাকিনের ভাড়া বাড়িতে গেলে অন্যায় প্রভাবশালী বাড়ির মালিক আমার ও সঙ্গীয় লোকজনের সহিত দুর্ব্যবহার করে, পুত্র যে রুমে ভাড়া থাকিত, সেই রুমে যাইতে বাধাগ্রস্থ করে অসদাচরণ করে,অসহযোগিতা করে ও নানা হুমকি প্রদর্শন করে আমার পুত্রের ব্যবহৃত ০১৭৪৫- নম্বর একটি মোবাইল যাহার মূল্য ৪৩,০০০(তেতাল্লিশ হাজার) টাকা এবং অনুমান নগদ ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার) টাকা পুত্রের ভাড়া বাসার শয়ন রুম থেকে চুরি করে। উত্তমরূপ আচারণ ও হত্যা ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা এবং স্থানীয় লোকদের তথ্যাদিতে আমি সহ আমার সঙ্গীয় লোকজন জানিতে পারি মোঃ মিলটন পুত্রের নিকট ব্যক্তিগত ৩ দফায় লক্ষাধিক টাকা হাওলাত গ্রহন করে। পূত্রের ব্রাকে পদোন্নতি ও অন্যত্র বদলির সম্ভাবনায় মিলটনের নিকট উক্ত টাকা পূত্র ফেরত চাহিলে কথা কাটাকাটি হয় । পূত্র বিষয়টি মোঃ খবির উদ্দিনকে বলিলে মিলটন পরস্পর যোগসাজশে পূত্রের পাওনাকৃত টাকা ফেরত না দেওয়ায় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়া বাক-বিতন্ডা করে। বাক-বিতন্ড করার কারনেই গত ২৫/০৪/২১ ইং তারিখে রাত অনুমান ৮.০০ ঘটিকা থেকে গত ২৬/০৪/২১ ইং তারিখ অনুমান ভোর ৫.০০ঘটিকা পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে মোঃ মিলটনের হুকুম ও নেতৃত্বে অন্যায় প্রভাবশালী আরো অনেকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে পরস্পর প্ররোচনা ও সহয়তায় পূত্রের উক্ত ভাড়া বাড়িতে পূত্র রাকিবুল হাসান ওরফে পলাশকে মারপিট ও গলা টিপিয়া শ্বাস রুদ্ধ করিয়া কৌশলে হত্যা করিয়া গলায় ওরনা দিয়ে মরদেহটি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলাইয়া রেখে হত্যার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের অপচেষ্টা করিলে আমি ২৬/০৪/২০২১ ইং তারিখে পূত্র রাকিবুল হাসানের হত্যা মামলা করিবার জন্য ঘটনাস্থল হইতে গাইবান্ধা সদর থানায় ফিরিয়া গেলে গাইবান্ধা থানা কর্তৃপক্ষ জানায় যে, মৃত পূত্র রাকিবুল হাসান এর ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে বাদীকে ডাকিয়া নিয়মিত মামলা রুজু করিবেন বলিয়া আমাকে আসস্থ করিয়া আমার মোবাইল নম্বর থানা কর্তৃপক্ষ লিখিয়া রাখেন। পূত্রের ময়না তদন্ত শেষে উক্ত থানা কর্তৃপক্ষ পূত্রের ব্যাবহৃত ০১৭১০- আরেকটি মোবাইল ফোন থানা কর্তৃপক্ষ অকেজো অবস্থায় ফেরত দেয় এবং কোন চালান বা ছাড়পত্র ছাড়াই লাশ দাফনের মৌখিক অনুমতি প্রদান করেন। পূত্রের লাশ গোসলের সময় মোঃ শহিদুল ইসলাম ও মোঃ সাইফুল ইসলাম সহ আরো অনেকে উক্ত লাশের দেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখিতে পান। গ্রামের গোরস্থানে পূত্রের লাশ গত ২৭/০৪/২১ ইং তারিখে সকাল ৯ ঘটিকায় জানাযা শেষে দাফন করি।
গাইবান্ধার সদর থানার কর্তৃপক্ষের অপেক্ষায় থেকে তাদের যোগাযোগ বিলম্ব দেখে পূত্রের শোকে মুহ্যমান থাকায় ও কোভিড-১৯ এর লকডাউন থাকায় তথ্যানুসন্ধান সংগ্রহে পারিবারিক পরামর্শক্রমে অত্র চুরি যাওয়া মালামাল ও নগদ টাকা বাবদ মোট = ৯৩,০০০/-(তিরানব্বই হাজার) টাকা ক্ষতির পরিমাণ উপরোক্ত ঘটনা ও অবস্থাধীনে এবং সুষ্ঠ ও ন্যায় বিচরের স্বার্থে দঃ বিঃ ৩০২/৩৮০/৩৪/১০৯ ধারা মতে আশু আইনগত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে ১। মোঃ শফিকুল ইসলাম ওরফে মিলটন (৩৪) ২। মোঃ মিরন(৩২) উভয়ের পিতা মোঃ নজরুল ইসলাম। ৩। মোছাঃ বিউটি বেগম(২৮) জং মোঃ মিলটন ৪। মোঃ খবির উদ্দিন(৫৭) পিতা- মৃত আব্দুল বাকী। ৫। মোঃ জেহাদ আলী (৩৭) ৬। মোঃ বোরহান আলী (৩৪) ৭। মোঃ আনন্দ (৩২) ৮। মোঃ উৎসব (৩০) সর্ব পিতা- মোঃ খবির উদ্দিন সর্ব সাং- চাপাদহ মধ্য পাড়া ৩নং ইউ,পি কুলতলা থানা- গাইবান্ধা সদর জেলা গাইবান্ধাগণ সহ ১-৮ জন কে আসামী করে আইনের প্রতি শ্রোদ্ধা রেখে ন্যায় বিচার প্রার্থী হয়ে ২৫/০৫/২০২১ ইং তারিখে বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত গাইবান্ধা সদর থানা, গাইবান্ধায় মামলা দায়ের করি, মামলা নং- সি,আর- ২৯৬/২০২১ (গাইবান্ধা)। ২৫/০৫/২০২১ ইং তারিখে মামলা দায়ের করিলে আসামীগন অন্যায় প্রভাবশালী হওয়ায় আসামীদের ভয়ে ও অন্যায় প্রভাবে স্থানীয় লোকজন মুখ খুলতে পারে না বিধায় ৭ মাস ২৫ দিনের মাথায় আমার ছেলের মৃত্যুর আসল রহস্য উম্মোচন ও মামলার তদন্ত ছাড়াই ইউডি মামলার রিপোর্ট প্রতিবেদনের উপর আসামী গনকে উক্ত মামলার দায় হইতে অব্যহতি দিয়ে ২০৩ ধারার বিধান মতে মামলাটি ১৯/০১/২২ ইং তারিখে খারিজ করলে পুনরায় ন্যায় বিচারের আশায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত গাইবান্ধায় রিভিশন মামলা দায়ের করেন যাহার নম্বর ১০/২২।