মোঃ রুবেল আহমেদ (বিশেষ প্রতিনিধি টাঙ্গাইল)
কমিউনিটি পুলিশিং এবং সমাজসেবামূলক কাজে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি কর্তৃক ‘এসএম আহসান স্মৃতি পুরস্কার পেলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন।
শনিবার (২৪ডিসেম্বর) দুপুরে রাজারবাগস্থ বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে সমিতির ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম তাঁর হাতে এ সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন।
পুলিশের এআইজি (কমিউনিটি এন্ড বিট পুলিশিং) আফরিদা রুবাই, পিপিএম জানান, কমিউনিটি পুলিশিং এবং সমাজসেবামূলক কাজে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি কর্তৃক বাংলাদেশের তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে চুড়ান্তভাবে এ পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাঁরা হলেন-টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন, খুলনার খালিশপুর থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার এসআই হাবিবুর রহমান। এছাড়াও নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু অধিকার সুরক্ষার লক্ষে ভিকটিম সাপোর্ট এবং সমাজসেবামূলক কাজে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ঢাকার আশুলিয়া থানার এসআই নাছরিন আফরোজকে প্রফেসর অনামিকা হক লিলি-ড.এম এনামুল হক পুরস্কার প্রদান করা হয়। ওসি মোশারফ হোসেন গোপালপুর থানায় যোগদানের পূর্বে টাঙ্গাইলের কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বপালন করেছেন।
গ্রামটি বিস্তীর্ণ চর এলাকা। গ্রামের পরিবারগুলোতে কন্যাসন্তান জন্ম নিলে বোঝা মনে করা হত। কিন্তু কন্যাসন্তান বোঝা নয়; আশীর্বাদ এই বিষয়টি প্রচার করে তিনি ঘোষণা দেন, ‘কন্যাসন্তান জন্ম হলে ফোন করুন, উপহার পৌঁছে যাবে সাথে সাথে । পুলিশ কর্মকর্তার এই ঘোষণার বিষয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চার কন্যাসন্তানের মা-বাবা তাঁর কাছে গিয়ে উপহার নেন। তখন তিনি একটি ফেস্টুন টাঙিয়ে লিখেন, ‘কন্যাসন্তান বোঝা নয়, আশীর্বাদ। কন্যাসন্তান আল্লাহ তা-আলার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। কন্যাসন্তান মা-বাবার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করে। কন্যাসন্তান জন্ম হলে ফোন করুন, উপহার পৌঁছে যাবে সঙ্গে সঙ্গে। তাঁর এই ফেস্টুন ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ফেসবুকে বিষয়টি জানতে পেরে উপহার নেন মাসুদা খাতুন নামের এক নারী। তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম কন্যাসন্তান হয়েছে। উপহার পেয়ে আমি ও আমার স্বামী দু’জনই খুশি হয়েছি।” এ বিষয়ে মো. মোশারফ হোসেন বলেন, যে কোনো পুরস্কার কাজের গতি বৃদ্ধি করে। আজ থেকে আমার দায়িত্ব আরো বেড়ে গেলো। আমি সকলের কাছে দোয়াপ্রার্থী। পুলিশের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমি লক্ষ করেছি মেয়ে সন্তান হলে মা-বাবা মন খারাপ করেন। তাই এলাকার মানুষকে অনুপ্রেরণা ও উৎসাহিত করতে পরিকল্পনা করি। আমার উদ্দেশ্য, মেয়ে ও ছেলে উভয়ই সমান। মা-বাবা যেন কন্যাসন্তানকেও উচ্চশিক্ষা দেয় এবং ছেলে সন্তানের মতোই মনে করে, এটাই বোঝাতে চাচ্ছি। ’তিনি আরো বলেন, “আমার ও আমার স্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে কন্যাশিশুর জন্য ‘লাভ টোকেন’ স্বরূপ ছোট উপহার নিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করি। একটা ক্রেস্টের সঙ্গে শিশুর জন্য ডায়াপার, লোশনজাতীয় সামান্য কিছু উপহার দেই। জন নিজের সাধ্যের মধ্যেই চেষ্টা করা। বড় কোনো উপহার দিতে না পারলেও তাদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করি ও আমার স্ত্রী ও আমার বেতনের একটি অংশ দিয়ে ছোট্ট উপহার দেই তারা অনেক খুশি হয়। আমি চাই আমার দেখাদেখি সবাই যেন এগিয়ে আসে। কন্যাসন্তান বোঝা নয়, আশীর্বাদ এটাই জানান দিতে চাই।