নিজস্ব প্রতিবেদক
প্যানেলের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তৃতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ২০১৮ সালের নিয়মিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। তারা দাবি তুলে ধরে বলেন, ‘২ শতাধিক সংসদ সদস্যের ডিও (আধা সরকারি চিঠি) গুরুত্ব না দেওয়া এবং সংসদীয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। মুজিববর্ষে প্যানেলে নিয়োগের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সামনের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। কাফনের কাপড় পরে সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ শুরু করেছেন প্রার্থীরা।
এর আগে, ২০১৮ সালের নিয়মিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ না পাওয়া ৩৭ হাজার ১৪৮ জনের প্যানেলভুক্তির দাবিতে রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করা হয়। সোমবার (১২ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিন বৃষ্টি উপেক্ষা করেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় দিনভর কর্মসূচি পালন করে রাতেও সেখানেই অবস্থান নেন প্রার্থীরা। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তাদের একাংশ। এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনেও অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
প্যানেল প্রত্যাশী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দাবির পক্ষে ১৮০ জন সংসদ সদস্যের ডিও রয়েছে। প্যানেলে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটির সুপারিশ রয়েছে। তারপরও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্যানেলে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। তাই আমরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।’
উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় প্রাথমিক শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতা দূর করতে প্যানেল পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করা হয়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্যানেল প্রত্যাশীরা বলেন, ‘দুই শতাধিক সংসদ সদস্যের ডিও এবং সংসদীয় কমিটির সুপারিশ গুরুত্ব দেননি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব। করোনা মহামারির মধ্যে ৩২ হাজারের বেশি শিক্ষক নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়েই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না, আন্দোলন কর্মসূচি চলিয়ে যাবো।’
জানা যায়, ২০১৮ সালের নিয়মিত শিক্ষক বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে আবেদন করেন ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৭ জন। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হন ৫৫ হাজার ২৯৫ জন। শূন্যপদ বাকি রেখেই নিয়োগ দেওয়া হয় মাত্র ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে। উত্তীর্ণ ৩৭ হাজার ১৪৮ জন প্যানেলভুক্তির অপেক্ষায় থাকলেও তাদের বিষয়ে কোনও বিবেচনা করা হয়নি।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে স্থগিত করা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৯ হাজার ৭৮৮ জনকে প্যানেলে নিয়োগের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে রাজধানীসহ জেলায় জেলায় আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সংসদ সদস্যদের ডিও নিয়ে মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আবেদন জানান তারা। এই আন্দোলন কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর কাঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে ২০১৮ সালের নিয়মিত উত্তীর্ণ প্রার্থীরা গত রবিবার (১১ অক্টোবর) থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। সব মিলিয়ে দুটি নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫৬ হাজার ৯৩৬ জনকে প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের দাবিতে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আলাদাভাবে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]