ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভিন পপি অনেক দিন ধরেই আড়ালে। সিনে পাড়ায় গুঞ্জন, বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন তিনি। জন্ম দিয়েছেন সন্তান। তবে এসব নিয়ে একবারে মুখে কলুপ এঁটেছিলেন পপি। আসেননি সামনেও।
তবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আসন্ন নির্বাচন প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জনপ্রিয় এই নায়িকাকে।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর থেকেই পপির সাড়ে ৫ মিনিটের একটি ভিডিওবার্তা ছড়িয়ে যায় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গ্রুপে। যেখানে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু না বললেও শিল্পী সমিতির আসছে নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলেছেন তিনি।
পপি বলেন, ‘ভেবেছিলাম আর কখনোই ক্যামেরার সামনে আসবো না। কিন্তু একজন শিল্পী হিসেবে এবং নিজের কিছু দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আজকে কিছু কথা না বললেই না।’
তার ভাষ্য, ‘দীর্ঘ ২৬ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে সুনামের সাথে কাজ করার চেষ্টা করেছি। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। আজকে অনেক কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছি, আজ আমি কোথায়! আমি আছি আপনাদের মাঝেই, হয়তো ভাগ্য থাকলে আবারও ফিরব।’
শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির একজনকে ইঙ্গিত করে এই নায়িকা বলেন, ‘বর্তমান শিল্পী সমিতির একটি মাত্র লোকের কারণে, তার পলিটিক্স এবং তার অনেক রকম অসহযোগিতার কারণে আমাকে বারবার অপমানিত হতে হয়েছে। শুধু আমি না, আমার মতো রিয়াজ, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, নিপুণও অপমানিত হয়েছেন। আমাদেরকে ব্যবহার করে যে এই চেয়ারটিতে বসেছে- সেখানে বসেই বিভিন্ন রকমের অপকর্মের চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা গুটি কয়েক তাতে সাঁয় দিইনি। যার কারণে আজকে আমি ভিক্টিম। আমার মতো শিল্পীকে সদস্য পদ বাতিলের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। এতো বছর কাজ করার পর এমন আচরণ, একটা শিল্পীর জন্য কতোটুকু অপমানের- সেটা আমি বুঝতে পারি। ১৮৪জন শিল্পীরাও এই কষ্টটা বুঝতে পারবে।’
পপির কথা, ‘এসব কারণে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। আমার কাছে সদস্য পদ বাতিলের চিঠিটা এখনও আছে। ওই চিঠিটা যখনই পেয়েছি, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছি- এই নোংরামির মধ্যে আর আমি যাবো না। ভেবেছি, কখনো যদি পরিবেশ ভালো হয়- তখনই চলচ্চিত্রে ফিরব।’
হাত জোর করে পপি চলচ্চিত্র শিল্পীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা যে ভুলটা করেছি, দয়া করে আপনারা সেই ভুলটা করবেন না। চলচ্চিত্র বাঁচলেই আমরা বাঁচব। আমরা পরিবর্তন চাই, কাজ চাই। সেজন্য আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের পরীক্ষিত সৈনিক কাঞ্চন ভাই, নিপুণ, রিয়াজদের একটা সুযোগ দেয়া উচিত। ভালো কাজের জন্য। তারা অন্তত শিল্পীর মূল্যায়ন করবে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ১৭তম নির্বাচন এটি। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে দুটি প্যানেল কাঞ্চন-নিপুণ ও মিশা-জায়েদ পরিষদ। এবার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন পীরজাদা হারুন। দুজন সদস্য হলেন বি এইচ নিশান ও জাহিদ হোসেন। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সোহানুর রহমান সোহানকে। আপিল বোর্ডের সদস্য মোহাম্মদ হোসেন জেমী ও মোহাম্মদ হোসেন।