সোশ্যাল মিডিয়ায় কল্যাণে প্রতিদিন অনেক মানবতার ফেরিওয়ালার চিত্র আমরা দেখছি, আজ একজন প্রচার বিমুখ মানবতার ফেরিওয়ালাকে উপস্থাপন করতে চাই । যিনি একযুগের বেশি সময় ধরে কোন স্বার্থ ছাড়াই মানবতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে সংবাদকর্মী বড়ভাই, গুরু ও বন্ধু সমতুল্যদের সাথে গিয়েছিলাম ঐতিহ্য সমৃদ্ধ রাজশাহী অঞ্চলে, দুপুরের খাবারের জন্য যাত্রা বিরতি হলো, রাজশাহীর রাজ তিলক সিনেমা হল লাগোয়া একতা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে, স্থানীয়ভাবে একতা কালাভুনা নামে ব্যাপক পরিচিত। আমি কিন্তু কারো জন পেইড প্রমোশন করছি না, আপনাদের নিয়ে যাচ্ছি একজন প্রকৃত মানবতার ফেরিওয়ালার কাছে।
টেবিলে আসন নির্দিষ্ট হবার পর, ফ্রেশ হতে চলে গেলাম বেসিনে ।
চোখে পড়লো লম্বা এক টেবিল, ১৫/১৬জন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা তৃপ্তির ঢেকুর তুলে খাবার খাচ্ছে ডিম ও ডাল ভাত।
একাধিক মেসিয়ার তাদের খাবার পরিবেশন করছে, আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম এরা কারা, মেসিয়ার হেসে উত্তর দিলো এরা আমাদের নিয়মিত কাষ্টোমার।
জিজ্ঞাসা করলাম একটু বিষয়টি ক্লিয়ার করুন, তিনি জানালেন প্রতি শুক্রবার তাদের হোটেলে ১৫০ থেকে ২০০জন মানুষকে তার মালিক ফ্রি খাওয়ান, শুক্রবার ছাড়াও প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ মানুষকে ফ্রি খাওয়ানো হয় । এক শুক্রবার ডিম পরের শুক্রবার মুরগি এভাবেই চলে আসছে ১২ বছর আগে থেকে। হোটেল মালিক জহুরুল ইসলাম লিটনের বাবা একযুগ আগে এই নিয়ম চালু করার পাঁচ বছর পর মারা যান, পরের ৭বছর ধরে বাবার জারি করা আদেশ পালন করে আসছেন তিনি।
শুনলাম রাজশাহীতে কালা ভুনার জন্য অনেক বিখ্যাত হোটেলটি, ভীড় থাকে অনেক, এ যেন সৃষ্টিকর্তার পরম প্রতিদান।
আমরা প্রায় ৩০ মিনিট অবস্থান করেছিলাম, এসময়ের দলে দলে কিছু মানুষ ঢুকতে ও বের হতেছিল, কিছু মানুষ হোটেলের সামনে অবস্থান করতেছিল, যাদের দেখে সহজে আন্দাজ করা গেলো , এরা দুমুঠো ভাত খেতে এসেছে ।
একযুগ আগে ছিলোনা সোশ্যাল মিডিয়ার এতটা জনপ্রিয়তা, ছিলো না উচ্চ গতির ইন্টারনেট সুবিধা, ছিলোনা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচার পাওয়ার কোন বাসনা। কিছু প্রাপ্তির প্রত্যাশা না করে যিনি বা যারা একযুগ ধরে মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন, তারাই প্রকৃত মানবতার ফেরিওয়ালা।
স্যালুট জানাই এই মানবতার ফেরিওয়ালাকে।
মোঃ রুবেল আহমেদ
সংবাদকর্মী,
নির্বাহী সদস্য, গোপালপুর প্রেসক্লাব।
মিডিয়া এক্সিকিউটিভ, ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ।