রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || মঙ্গলবার | ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
ফুলবাড়ীয়ার উপ-স্বাস্থ্য কল্যাণের বেহাল দশা
আজিজুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের বেহাল দশায় চিকিৎসা সেবা প্রদান দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। মূল্যবান ঔষুধপত্রসহ সরঞ্জামাদি ঝুঁকির মধ্যে রেখে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুটিজানা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষের দরজা ভাঙ্গা। জানালার গ্লাস ভাঙ্গাচুরা, বাথরুমের বেসিন এবং কমেড ভেঙ্গে পড়ে আছে। পরিত্যক্ত কক্ষগুলোতে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। থাকার রুম এবং বাথরুমগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সর্বত্র ময়লা-অবর্জনা জমে আছে। কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়ায় দোতলার ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার ধসে পড়ে। সামান্য বৃষ্টিতে ছাদ থেকে পানি পড়ে ভিতরের কক্ষের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে। ছাদে পানির টেংকি মরিচা পরে ব্যবহারের অযোগ্য। সেখানে চিকিৎসকের বসার জন্য একটি কক্ষ আছে, কিন্তু চেয়ার-টেবিল ভাঙ্গা। পাশের রোগীর কক্ষে পুরানো ভাঙা চেয়ার আর রোগীদের বেড সব ভেঙে যাওয়ায় মাকড়সা বাসা বেঁধেছে। দোতলায় চিকিৎসক থাকার কক্ষটি ভাঙাচোরা ও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ওয়ারিং করা তার ও বোর্ড ঝূঁলে পড়েছে। একই দশা উপজেলার সব উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। ভবনের আশেপাশে গরু, ছাগলের বসবাস, ভবণ ঘেষে লাকরী আর মাকড়শার জাল ভরা। ফলে ভবনটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।পুটিজানা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. হাফিজুর রহমান বলেন, এই কেন্দ্রে প্রতিদিন অনেক রোগির চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান করা হয়। এখানে সকল প্রকার ঔষধ রোগিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ডায়বেটিস পরীক্ষা, ওয়েট মেশিন, প্রেসার মাপা যন্ত্র, শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে গভর্বতী মাকে এখান থেকে নিয়মিত প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। গভর্বতী মাকে নিয়মিত ভাবে দুরবর্তী গ্রাম থেকে শহরে অথবা সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হয় না।পুটিজানা ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা মোছাঃ মুর্শিদা বেগম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবকাঠামো একেবারই ব্যবহার অনুপযোগী। স্থানীয়রা জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দীর্ঘ দিন যাবৎ এই অবস্থা । বাউন্ডারি প্রাচীর না থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এভাবে থাকলে আরো কিছুদিন পর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে।সরকার প্রতি বছর বাজেট কর্মসূচি ঘোষণা করলেই দেখা যায় প্রায় ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রদান করেন। অথচ দীর্ঘকাল ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অবকাঠামোর কোন পরিবর্তন হয়নি। গ্রামের মানুষ এখন কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রমুখি।উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. হাফিজুর রহমান বলেন, পুটিজানা ইউনিয়নে কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। স্থানীয় রোগী ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের রোগী এখানে বেশি। প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগীকে আমি সেবা দিয়ে থাকি।এ ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষেরা ব্যাপকভাবে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন সে লক্ষ্যে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসী।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.