কংগ্রেস ভবনে কলঙ্কজনক হামলার পর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অসম্মানজনকভাবে বিদায় করতে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। বুধবার (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোররাত) যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পকে অভিশংসনের (ইমপিচমেন্ট) প্রস্তাব পাস হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, ডেমোক্রেটিক পার্টির আনা এই প্রস্তাবে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টিরও সমর্থনও মেলে।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে লিজ চেনিসহ ১০ রিপাবলিকান নেতা ভোট দেন ডেমোক্র্যাটদের আনা এ প্রস্তাবে। ৪৩৫ সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাবটি ২৩২-১৯৭ ভোটে পাস হয়।
ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্পই হলেন একমাত্র প্রেসিডেন্ট যাকে দুবার অভিশংসন করা হল। এর আগে ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসনের সম্মুখীন হন।
অভিশংসনের ফলে সিনেটে ট্রাম্পকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। যদি বিচারে দোষী সাব্যস্ত হন, তা হলে নিজের কার্যালয় তাকে ত্যাগ করতে হতে পারে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ট্রাম্পকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, এর আগে সিনেট অধিবেশন আবার হবে না। তাই ক্ষমতা ছাড়ার আগে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হচ্ছে না ট্রাম্পকে।
ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত হাউসে বুধবার কয়েক ঘণ্টার বিতর্ক শেষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে ও বাইরে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পাহাড়া দিচ্ছিলেন। এদিকে, বাইডেনের অভিষেকের দিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিসহ ৫০টি অঙ্গরাজ্যে সশস্ত্র বিক্ষোভের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
অভিশংসনের পরে ট্রাম্প একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। এতে তিনি তার সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, যদিও অভিশংসিত হওয়ার বিষয়টি তিনি ভিডিওতে উল্লেখ করেননি। ভিডিওতে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দেশে সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের কোনো স্থান নেই। আমার সত্যিকার কোনো সমর্থক কখনোই রাজনৈতিক সহিংসতাকে সমর্থন করতে পারে না।’
অভিশংসনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অভিযোগ আনা হয়েছে, কোনো অপরাধমূলক অভিযোগ নয়। গত ৬ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের বাইরে একটি র্যালিতে ভাষণে ক্যাপিটল ভবনে হামলায় তিনি উসকানি দিয়েছেন এমন অভিযোগ আনা হয়েছে অভিশংসনে।
অভিশংসনের নিবন্ধে বলা হয়, ‘ট্রাম্প বারবার মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলে জালিয়াতি হয়েছে এবং এই ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয়।’
সেখানে আরও বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র ও এর সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা গুরুতরভাবে ব্যহত করেছেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সততাকে হুমকির মুখে ফেলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ব্যহত করেছেন এবং সরকারের সমতুল্য একটি শাখাকে বিপন্ন করেছেন।’
অভিশংসনের নিবন্ধ সিনেটের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং সিনেট একটি বিচারের মাধ্যমে নির্ধারণ করবে প্রেসিডেন্ট দোষী কিনা। ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে সিনেটের দুই তৃতীয়াংশ ভোট দরকার হবে। এর মানে হল ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে অন্তত ১৭ জন রিপাবলিকানকেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]