পাঁচ দশকধরে বঙ্গবন্ধুর চিঠি সংরক্ষণকারী শহীদ রমজান আলীর স্ত্রী ভিখারী ইফাতনের বাড়ীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা উপহার পৌছে দিলেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি। আজ রবিবার বিকালে ধনবাড়ী উপজেলার পানকাতা গ্রামে ইফাতনের বাড়ীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নগদ ২০হাজার টাকা, টাঙ্গাইলের শাড়ি, ফলমূলসহ খাদ্যসামগ্রী পৌছে দেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গোপালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনুছ ইসলাম তালুকদার, গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. পারভেজ মল্লিক, ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসলাম হোসাইন, গোপালপুর পৌরমেয়র রকিবুল হক ছানা, গোপালপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন, গোপালপুর উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান মীর রেজাউল হক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আক্তার মুক্তা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক সাইফুল ইসলাম তালুকদার, প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক সন্তোষ কুমার দত্ত, ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম প্রমূখ। এর আগে জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি ৭১ সালে গোপালপুর উপজেলায় মাহমুদপুর গণহত্যায় নির্মিত স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে এক সমাবেশ করেন। সেখানে জেলা প্রশাসক জানান, গত ৭ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে শহীদ রমজান আলীর স্ত্রী ইফাতন বেওয়াকে নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ইফাতন বেওয়ার স্বামী রমজান আলী ৭১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মাহমুদপুর গণহত্যার দিন শহীদ হওয়ার স্বীকৃতি হিসাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি চিঠি পান। ৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধুর পাঠানোর ঐ চিঠি ইফাতন বেওয়া ৫০ বছর ধরে সংরক্ষণ করে আসছেন। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বিধবা ইফাতনের খবর কেউ রাখেননি। এটি ছিল খুবই বেদনাদায়ক। অভাব অনটনে ইফাতন বেওয়া পেট চালাতে ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করেছেন। প্রকাশিত খবরটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে আসে। আজ রবিবার টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসককে তিনি গণহত্যার শিকার ইফাতন বেওয়াসহ শহীদ ১৭ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসক আরো জানান, ইফাতন বেওয়াসহ ১৭ শহীদ পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা হিসাবে ১টি করে বীরনিবাস নির্মাণ করে দেয়া হবে। তাঁরা যাতে শহীদ পরিবারের সদস্য হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শহীদ পরিবারের হত দরিদ্র সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার পেয়ে খুশিতে আপ্লুত হন। ইফাতন বেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, অভাব অনটনের সাথে ৫০ বছর লড়াই করেছি। বহুদিন অনাহারে থাকতে হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় মাগন করে পেট চালিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আজ রবিবার নগদ অর্থ ও উপহার সামগ্রী পেয়ে নিজকে ধন্য মনে করছি। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন।