বরগুনা প্রতিনিধি:বরগুনার বেতাগীতে চলতি আমন মৌসুমে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকেরা। ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর দেড় মাসের বেশি সময় পার হলেও এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ।
বাজারদরের চেয়ে সরকারিভাবে ধানের মূল্য কম নির্ধারণসহ বিভিন্ন কারণে কৃষকেরা ধান বিক্রি করতে রাজি হননি। যে কারণে চলতি মৌসুমেও গত বছরের মত সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হবার পথে।
উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে বেতাগীতে ধান সংগ্রহ অভিযান শেষ হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী। গত ২৯ নভেম্বর সারা দেশে একযোগে এ অভিযান শুরু হয়।
এবার বেতাগী উপজেলার কৃষকের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে ৫৯৮ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু গতকাল শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ করা যায়নি।
স্থানীয় কৃষক ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে বেতাগী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে প্রতি মণ আমন ধান সাড়ে ১২শত থেকে ১৩ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ স্থানীয় হাটবাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে, সরকারি গুদামে সে তুলনায় কম দাম দেওয়া হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে গুদামে ধান বিক্রি করতে চাচ্ছেন না কৃষকেরা। কারণ, কম দামের পাশাপাশি সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে অনেক ঝক্কি-ঝামেলাও পোহাতে হয়।
আর্দ্রতার কথা বলে প্রতি মণে এক-দুই কেজি করে বেশি ধান নেওয়া হয়। অনেক সময় ধান ফেরতও দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এসব ঝক্কি-ঝামেলা নেই।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের কৃষক মো. সালাউদ্দিন বলেন, এবার সরকারি দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় খোলাবাজারে ধান বিক্রি করেছি। এছাড়া সরকারি গুদামে ধান দেওয়া অনেক ঝামেলার।
আর্দ্রতার কথা বলে অনেক সময় ধান ফেরত দেওয়া হয়। এতে সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এসব ঝামেলা নেই। ধান বাজারে না নিয়ে গেলেও পাইকারেরা বাড়িতে এসে ধান মেপে কিনে যায়।
উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার কৃষক মো. হানিফ খান দুই বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেন। খাওয়ার জন্য রেখে প্রায় ৩০ মণ ধান তিনি খোলাবাজারে বিক্রি করেছেন। তিনিও সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে চান না। কারণ, সেখানে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। বাজারে ধান বিক্রি করে সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাওয়া যায়। এ জন্য খোলাবাজারে সব ধান বিক্রি করেছেন।
বেতাগী উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিগান দেবনাথ বলেন, ‘ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। তবে আমরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। গুদামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় এবং ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা তোলার ঝামেলা এড়াতে কৃষকরা গুদামে ধান দিতে চায় না।’
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]