স্পেশাল প্রতিনিধি মিনহাজ উদ্দিন – গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী এলাকায় ১৯ কোটি টাকায় নির্মিত বরমী সেতুটি এক বছর ধরে কোনো কাজে আসছে না। দামি সড়কবাতি, বাহারি রঙের রেলিং-কী নেই সেতুটিতে। রাত হলেই উজ্জ্বল বাতিগুলো একসঙ্গে জ্বলে উঠে। দূর থেকে দেখে মনে হয়ে আধুনিক কোনো সেতু। কিন্তু কাছে গেলেই দেখা মিলে বিচিত্র এক দৃশ্যের। এর সব ঠিক থাকলেও একপাশে সংযোগ সড়ক নেই। তাই ব্যবহার করা যাচ্ছে না প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বরমী সেতুটি।
সেতুটির অবস্থান গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বানারের শাখা ‘ধাত্রী’ নদীর ওপর। এটি ঐতিহ্যবাহী বরমী বাজারকে নদীর পূর্ব পাশের গ্রাম পাইটালবাড়িকে যুক্ত করার কথা। এমনকি এই সেতুর মাধ্যমে মাওনা-গফরগাঁও সড়কের বরমী বাজার অংশে বাইপাস যাত্রায় দূরত্ব কমে যাওয়ার কথা। সেই সঙ্গে লাগব হওয়ার কথা ছিল বরমী বাজারের নিত্যদিনের যানজটের। সেতু চালু না হওয়ায় দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ রয়েই গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ১৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করেছে। এর দৈর্ঘ্য ৯৭ দশমিক ৩৪ মিটার। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে এটি তৈরির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য। ২ বছর ১০ মাসের মাথায় এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। এই সেতুর জন্য একপাশে ১ একর ৩৭ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণ করা এসব জমির ওপর ওই এলাকার ১৭টি পরিবার বসবাস করছে। মেসার্স আর পি কনস্ট্রাকশন ও এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং নামের দুটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে সেতু তৈরি করেছে।
গত বৃহস্পতিবার সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুর ওপর আড্ডা দিচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। অনেকেই নিজেদের গাড়ি সেতুর এক পাশের ওপর তুলে ধোয়া-মোছার কাজে ব্যস্ত। কেউ আবার সেতুর ওপর বরশি নিয়ে বসে আছেন মাছ শিকারে। অব্যবহৃত সেতুর মাঝখানে বালু ও ইটের খোয়ার স্তূপ। সেতুর পশ্চিম পাশে মাওনা-গফরগাঁও আঞ্চলিক সড়ক থেকে সেতুতে উঠার জন্য একটি সংযোগ সড়ক আছে। তবে সেতুর পূর্ব দিকে সংযোগ সড়ক নেই। এখানে পারাপারের কয়েকটি বালুর বস্তা ফেলে রেখেছেন।
সেতুর পাশের পাইটালবাড়ি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এক বছর আগে সেতু তৈরি হলেও পূর্ব পাশে সড়ক তৈরি করা হয়নি। জায়গা অধিগ্রহণের জটিলতা নিরসনে বারবার উদ্যোগ নিলেও তা সমাধান হয়নি জানান ।