মোঃ জাহিদুল ইসলাম, বরিশাল জেলা প্রতিনিধি:
বাকেরগঞ্জ উপজেলা শহরের কোল ঘেঁষে বয়ে গেছে তুলাতলী নদী। বাংলাদেশের সবচেয়ে নদীবহুল উপজেলা বাকেরগঞ্জ। ১০ টি নদী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
আর তুলাতলী নদীর সাথে এই উপজেলার শ্রীমন্ত, কারখানা, তেতুলিয়া, বিষখালী, পায়রা,পান্ডব, গোমা, রাঙ্গাবালিয়া ও খয়রাবাদ নদীর সাথে প্রতিদিন জোয়ার ভাটা চলে। এই তুলাতলী নদীর কোন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বাকেরগঞ্জ বন্দর উপজেলা শহর।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাকেরগঞ্জ বন্দরের পুরাতন লঞ্চঘাট টার্মিনালের পাশে তুলাতলী নদীতে পলিথিন, আশেপাশের বাড়ির ঘরের ময়লা-আবর্জনা, বন্দরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লার ভাগাড় ও ঔষধের বোতল, প্যাক, সুইসহ মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ-বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে।
এবং অতিরিক্ত সব বর্জ্যই বাকেরগঞ্জ বন্দরের লঞ্চঘাট টার্মিনালের পাশ থেকে নদীতে ফেলা হয়। এসকল বর্জ্যে তুলাতলী নদী দূষণের পাশাপাশি বায়ু দূষণও হচ্ছে। এবং এই দূষণ তুলাতলী নদী থেকে শুরু করে পুরো উপজেলার বিভিন্ন নদীতে ছড়িয়ে পড়ছে।
একসময় তুলাতলী নদীই ছিল বাকেরগঞ্জের প্রাণ। এ নদী দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মালামাল আনায়ন করা হতো। তবে দিন দিন নদীটি নাব্যতা হারাচ্ছে। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, তখন এ নদীতে সারা বছর মানুষ গোসল, নামাজের জন্য ওজু, নৌকা চালাচল করতো। এখনো বন্দরের শত শত পরিবারের লোকজন নদীতে গোসল করেন। একসময় নদীতে মাছ পাওয়া যেত অনেক। সেই টলমল পানি এখন নিক্ষিপ্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মূলত জনসাধারণের অসচেতনতার জন্যই প্রতিনিয়ত টার্মিনালের পাশ থেকেই নিক্ষেপ করেন বর্জ্য। প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য ফেলার কারণে নদীর পানি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এখন নদীর পানি দূষিত হওয়ার কারণে মাছ পাওয়া যায় না। বরং উল্টো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দিন কাটায় নদীপাড়ে বসবাসরত হাজারো মানুষ। এছাড়াও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অবহেলা আর গাফিলতির কারণে নদীতে দূষণ ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।