বাংলাদেশে জাহাজ ঢুকতে না দেবার বিষয়টি রাশিয়া ভালোভাবে নেয়নি। বিষয়টি তারা চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে।
রাশিয়া মনে করতে পারে বাংলাদেশ রাশিয়াকে উপেক্ষা করে আমেরিকার দাবি গ্রহণ করেছে।
“একটা তো আশংকা থাকছে, সেটা তো অস্বীকার করা যাবে না,” বলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির।
“রাশিয়াকে এই বার্তা দিতে হবে যাতে তারা বুঝতে পারে যে তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এ ধরণের একটা প্রশ্নবিদ্ধ বাহন আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করে এবং সে জায়গায় আমরা রিস্ক নিতে আগ্রহী নই,” বলেন মি. কবির।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার গত ১৪ বছর ধরে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন এবং ভারতের সাথে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে।
অনেকে মনে করেন বাংলাদেশ সরকার যেভাবে ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে সেটি হয়তো দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে।
ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে এখন কৌশল বদল করতে হবে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির।
বৃহৎ দেশগুলোর সাথে ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীতি হচ্ছে, নন-অ্যালাইন্ড ব্যালেন্স। অর্থাৎ কোন পক্ষে না যাওয়া। কিন্তু এখন ভারসাম্য রক্ষার জন্য কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
“কার চাহিদা কী সে বুঝে এবং আমার চাহিদা কী – এ দুটোর মধ্যে একটা সাযুজ্য তৈরি করতে হবে। যেটা এতোদিন আমাদের করতে হয়নি। আমি কার সাথে কোন কোন পর্যায়ে সম্পর্ক বজায় রাখবো সেটা আমাকে নির্ধারণ করতে হবে,” বলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মি. কবির।
গত কয়েকমাসে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছে আমেরিকা সরকারের উপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চাচ্ছে।
এতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের অসন্তুষ্টিও প্রকাশ পেয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, সেই ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে ঢাকার রুশ দূতাবাস এক বিবৃতি দিয়েছে, যাতে পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল এবং আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার’ অভিযোগ তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিককে ইঙ্গিত করে রাশিয়ার মতো আরেকটি দেশের দূতাবাস থেকে এধরণের বিবৃতি এক নজিরবিহীন ঘটনা।