জোবায়ের ফরাজী,বাগেরহাট প্রতিনিধি ,দৈনিক শিরোমণিঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দক্ষিনাঞ্চলের জেলা বাগেরহাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলায় এক কোটি ৫৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও কৃষি বিভাগ। তবে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট অতি প্রবল জোয়ারের পানিতে জেলার উপকুলীয় উপজেলা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মোংলাসহ ২ হাজার ৯১টি চিংড়ি খামারের মাছ ভেসে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।তাছাড়া,পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩ সহস্রাধিক পরিবার। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নেওয়ার পর জিনিয়া নামে ৪ বছরের এক মেয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, “বাগেরহাটের প্রধান নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও সদর উপজেলা কিছু এলাকায় বাঁধ উপচে ও সুইচ গেট দিয়ে ভেতরে পানি ঢুকেছে বলে খবর পাচ্ছি"।ঘেরের ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করতে মৎস্য কর্মকর্তারা মাঠে নেমেছেন বলে জানান তিনি।এদিকে,জোয়ারের পানিতে জেলার সড়কগুলোর মারাত্বক দুরবস্থা দেখা দিয়েছে,ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।বাগেরহাটের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতটি সড়কের আংশিক জায়গায় পানি উঠেছে। এর ফলে সড়কগুলো আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এসব সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠাবো"।সুন্দরবনের সব থেকে উঁচু এলাকা করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে জলোচ্ছ্বাসে ৪ থেকে ৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেলেও বন্যপ্রাণীগুলো নিরাপদ রয়েছে। তবে,পূর্ব সুন্দরবনের চান্দেশ্বর ও কোকিলমুনির দুটি বন অফিস, একটি স্টাফ ব্যারাক, একটি রেস্ট হাউজ, একটি ফুট ট্রেল বিধ্বস্ত ও ১১টি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।পাশাপাশি ৬টি পুকুর লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে। গাছপালার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও পর্যন্ত জানাতে না পারলেও দুবলা ও শরণখোলায় দুটি মৃত হরিণ ও মোরেলগঞ্জের একটি খাল থেকে সুন্দরবনের বিলুপ্তপ্রজাতির একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেছে বন বিভাগ।বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আজিজুর রহমান বলেন, "ইয়াসের প্রভাবে বাগেরহাটের নদ-নদীতে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে। বুধবারের জোয়ারের পানি ঢুকে বেশ কিছু নিচু এলাকার বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন, জোয়ারের পানিতে সাধারণ মানুষের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে"।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]