এক সপ্তাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গেল সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে আবার দরপতন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা কমে গেছে। একইসঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক ও লেনদেনের পরিমাণ।
গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬০ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৪ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে। অর্থাৎ বাজার মূলধন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। একইভাবে বাজার মূলধন কমলে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমে যায়।
বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গেল সপ্তাহে ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮০টির। আর ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে গেল সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৬২ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৯ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এ সূচকটি কমেছে ২৩ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২০ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক ও ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত বাছাই করা সূচকের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গেল সপ্তাহে এ সূচকটি কমেছে ৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৬২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৩ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৮ শতাংশ।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৯৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৩২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৩০ কোটি ১৩ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৯৬৭ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৬ হাজার ৬১৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৬৫০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫০১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ২৪৬ কোটি ২৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সাইফ পাওয়ারটেক, রহিমা ফুড, ইয়াকিন পলিমার, সোনালী পেপার, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং আনোয়ার গ্যালভানাইজিং।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]