শ্রীপুর উপজেলা বিশেষ প্রতিনিধি,মিনহাজ উদ্দিন : অদ্য ৮ অক্টোবর ২০২৪খ্রি. তারিখে বাপতা ৮নং বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, এবং উপস্থিত ইলিয়াস হোসেন বুরকুল ১নং ওয়ার্ড জয়েন সেক্রেটারি এবং কাওরাইদ ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এস এম শাহরিয়ার ও বাপতা মল্লিকবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য, তমিজ উদ্দিন শেখ, এবং সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ার, নিজাম, বোরহান সোহাগ, রোবেল উপস্থিত ছিলেন ।
বাপতা ৮নং বিএনপির সভাপতি – রফিকুল ইসলাম রফিক, শিক্ষকদের বলেন ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক কষ্ট করে কাজ করে, ছেলে মেয়েদের কে স্কুলে পাঠাই। কিন্তু বর্তমান ছেলেমেয়েরা ঠিকঠাকমতো লেখাপড়া করেন না, মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে, বাজারে আড্ডা দিতে ব্যস্ত থাকে, বর্তমান ছেলেরা নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে, এবং উনি বলেন বর্তমান ছেলে মেয়ে নষ্ট হওয়ার কারণ হচ্ছে মোবাইল । শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে করে বলে ছেলেমেয়েরা একদিন স্কুলে না গেলে পরবর্তী দিনে ১০ টাকা দিলে মাপ হয়ে যায়, বিএনপির নেতা শিক্ষকদের ক্লাসে বেত নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন । ছেলে-মেয়েদেরকে ঠিকঠাক মত শাসন না করলে ছেলেমেয়েরা নষ্ট হয়ে যায় । ঠিকমতো শাসন না করার কারণে ছাত্ররা বেয়াদব হয়ে যাই । এলাকার মুরুব্বিদেরকে সম্মান দেয় না, মা-বাবাকেও সম্মান দেয় না । বিএনপির নেতারা আরো বলেন স্কুলে মোবাইল নিয়ে আসতে পারবে না, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষকদের । এবং আজকের ক্লাসের পড়া, পরবর্তী দিনে ছাত্রদের কাছ থেকে ঠিকঠাক মতো, আদায় করতে বলেন । বিএনপির নেতারা সকল অভিভাবকদের বলেন তাদের ছেলেমেয়েদের ঠিকঠাক মত স্কুলে আসছে কিনা, লেখাপড়া করছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেন । শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে বলেন একজন লোকের জন্য প্রতিষ্ঠা নষ্ট করা যাবে না । স্কুলে বেত না রাখলে ছেলেমেয়েরা মানুষ হবে না । এ বছর যে ছেলেমেয়েদের দুই বিষয়ে ক্রস থাকবে, তাদেরকে ফরম ফিলাপ দেওয়া হবে না । ফেল করা ছেলেমেয়েদের কোন তদবির থাকবে না বলে জানান । এবং কোন টাকা বকেয়া রেখে ফরম ফিলাপ হবে না । বিএনপির নেতা বলে যদি ছেলেমেয়েরা রেগুলার ক্লাস করত, ঠিকঠাক মতো লেখাপড়া করত, তাহলে আমরা সেক্রিফাইস করতাম । বাবা-মা কষ্ট করে লেখাপড়া করাই, ছেলেমেয়েরা স্কুলে ফাঁকি দেয়, তা সুষ্ঠু বিচার চাই শিক্ষকদের কাছে । ছাত্র-ছাত্রীদের টোটালি মোবাইল নিষিদ্ধ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন । এবং কোন ছাত্র ছাত্রী স্কুলে মোবাইল নিয়ে আসতে পারবে না । এবং প্রতি গার্জিয়ানকে আবেদন ছেলে মেয়েরা ঠিকঠাক মতো স্কুলে এসে লেখাপড়া করছে কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে । বিএনপির নেতারা আরো বলেন শিক্ষকরা ও অফিসে বা ক্লাসে বসে ফেসবুক চালাতে পারবেনা । আইন সবার জন্য সমান । এবং বর্তমান স্কুলের ছাত্রছাত্রী অনেকটা কমে গেছে । বিএনপির নেতারা বলেন আমাদের সময় মোবাইলও ছিলো না, ক্লাসে বেত ছিল, ঠিক মতো লেখাপড়া হতো । এখন স্কুলে শাসনও নাই, তাই লেখাপড়া উঠে গিয়েছে।
বাপতা মল্লিকবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য, তমিজ উদ্দিন শেখ বলেন স্বৈরাচারি ফ্যাসিবাদীর আদেশ না মেনে বর্তমানের আদর্শ মেনে প্রতিষ্ঠানের হিসাব নিকাশ সহকারে এই গ্রামের মানুষ ও ছাত্রদের অভিভাবক তাদের মতামতে স্কুল চালাবেন, একজনের মতামতে স্কুল চালাবেন না । সর্বস্তরে জনগণ একসাথে যেন খোলামেলা থাকে । প্রতিষ্ঠানের কাজ করবেন সকল শিক্ষকদের কে নিয়ে এবং এলাকাবাসীকে নিয়ে, এই দাবি জানিয়েছেন । এবং বলেন আমি যদি কোন অন্যায় কাজ করে থাকি তাহলে আমাকেও ছাড় দিবেন না , এবং আগের কমিটিতে এমনও লোক আছে সিগনেচার পর্যন্ত করিনি, তবু কমিটিতে আছে। তারা কখনো স্কুলের খোঁজখবর নেয় নাই, তাদের বারবার বলার পরেও স্কুলে আনতে পারে নাই ।
শিক্ষকদের মাঝে উপস্থিত থাকেন, মোশারফ হোসেন প্রধান শিক্ষক, কাজী মোহাম্মদ হুমায়ন, ইব্রাহিম খলিল গণিত শিক্ষক, রুহুল আমিন বাংলা শিক্ষক, সেলিমুর রহমান অফিস সহকারী, আব্দুল হামিদ ইসলামিক শিক্ষক, রহিমা খাতুন সামাজক বিজ্ঞান শিক্ষক ।
শিক্ষকরা বলেন ছাত্ররা যেন মাদক থেকে দূরে থাকে, ঠিকঠাক মত স্কুলে আসে, অনুপস্থিত না করে, ছেলে মেয়েদের বাবা মা যেন খোঁজ খবর রাখেন ঠিকমতো স্কুলে আসছে কিনা বা লেখাপড়া করছে কিনা । শিক্ষকরা অভিযোগ করেন বিশেষ করে ছেলেরা এক ক্লাস থেকে দ্বিতীয় ক্লাস পর্যন্ত থাকেন, এরপর তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না স্কুলে । পরবর্তী টাইমে ছাত্ররা যদি স্কুলে আসে, জিজ্ঞেস করা হয় তোমরা কোথায় গিয়েছিলে, তারা উত্তরে বলে দোকানে ছিলাম বা বাড়িতে গিয়েছিলাম । শিক্ষকের প্রত্যেকটা ছাত্র ছাত্রীর পরিবারের কাছে দাবি, স্কুলে এসে শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রাখেন । শিক্ষকরা বলে ফ্যাসিবাদী সরকার এক সময় আমাদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছিল, বেত কেড়ে নিয়েছিল । কিন্তু বর্তমান সরকার মোবাইল নিষেধ দিয়েছে, স্কুলে বেত এখনো অর্ডার করেননি, কিন্তু বেত আমরা এখনো ছাড়িনি। শিক্ষকরা বলেন বেত ছাড়া স্কুল চালানো যায় না । আমরা মারি বা না মারি, ভয় দেখানোর জন্য হলেও স্কুলে বেত থাকা জরুরী । শিক্ষকরা প্রত্যেক পরিবারকে বলেন ছেলেমেয়েদের ভয় ভীতি দেখান লেখাপড়া করার জন্য। শিক্ষকরা বলেন স্কুলের আশেপাশে “বাইরের” কোন ছেলে দরকার ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেনা । শিক্ষকরা বলেন ছেলেমেয়েরা স্কুলের বেঞ্চের নিচে বই রেখে চলে যায়, আরো বলেন বাড়িতে নিয়ে কি করব পরের দিন তো নিয়ে আসতে হবে । ছাত্র-ছাত্রীরা বই রেখে বাহিরে ঘুরাঘুরি করেন । শিক্ষকরা বলেন ফ্যাসিবাদ সরকারের সময় এমন সময় গেছে, মোবাইল ছাড়া লেখাপড়ায় কষ্টকর হয়ে যেত । এজন্যই শিক্ষা খাত ধ্বংস হয়ে গেছে বলেন । শিক্ষকরা বলেন ফ্যাসিবাদ সরকারের সময় মাস্টারি করলে স্মার্টফোন লাগবে, তা না হলে শিক্ষকতা করা কষ্ট হয়ে যেত।