আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণ, লাল কার্ড বদলে হলুদ, লিওনেল মেসির পেনাল্টি মিসের পর তারই হেডে গোল- এমন সব নাটকীয়তায় ভরপুর ম্যাচে পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে পাল্টা এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। সেখান থেকে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়ে মূল্যবান একটি পয়েন্ট নিয়ে ফিরল উদ্দীপ্ত ভালেন্সিয়া। ক্যাম্প ন্যুয়ে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে লা লিগার ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে।
ম্যাচের শুরু থেকে একচেটিয়া চাপ ধরে রেখেও ভালেন্সিয়ার জমাট রক্ষণ ভেঙে সেভাবে ডি-বক্সেই ঢুকতে পারছিল না রোনাল্ড কুমানের দল। প্রথম ২০ মিনিটে প্রায় ৮০ শতাংশ বল দখলে রেখেও তারা পারেনি প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের কোনো পরীক্ষা নিতে। বার্সেলোনার আক্রমণের ঝাপটা সামলে এরপর পাল্টা আক্রমণে মনোযোগী হয় সফরকারীরা। পাঁচ মিনিটের প্রচণ্ড চাপে ২৬তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম সুযোগটি পায়ও তারা; তবে ইউনুস মুসার প্রথম প্রচেষ্টা প্রতিহত হওয়ার পর ফাঁকায় বল পেয়ে দেনিস চেরিশেভের নেওয়া শট ঠেকান রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলা ডিফেন্ডার আরাহো।
পরের মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে কার্লোস সোলেরের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। এরপরই এগিয়ে যায় ভালেন্সিয়া। ২৯তম মিনিটে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সোলেরের কর্নারের হেডে পোস্ট ঘেঁষে বল জালে জড়ান দিয়াখাবি। ছয় গজ বক্সের মুখে ফরাসি এই ডিফেন্ডারের মার্কিংয়ে ছিলেন না বার্সেলোনার কেউ!
বিরতির আগের মিনিটে মেসির দারুণ পাস ধরে ডি-বক্সে ঢোকা অঁতোয়ান গ্রিজমানকে ফাউল করায় হোসে গায়াকে লাল কার্ড দেখান রেফারি, পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। ভিএআরের সাহায্যে পরে লাল কার্ড বাতিল করে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। যদিও ভিডিও রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, স্প্যানিশ ডিফেন্ডার গায়া গ্রিজমানের কাঁধে হাত রাখলেও ধাক্কা দেননি এবং অতি সহজেই পড়ে গেছেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।
সরাসরি স্পট কিকেও অবশ্য গোল করতে পারেননি মেসি। তার শট দারুণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক হাউমে ডমেনেক। তবে আলগা বল বাঁ দিকে পেয়ে দূরের পোস্টে ক্রস বাড়ান আলবা এবং গোলমুখ থেকে হেডে ফাঁকা জালে বল পাঠান বার্সেলোনা অধিনায়ক।
বার্সেলোনার হয়ে সব মিলিয়ে মেসির এটি ৬৪৩তম গোল। এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডে কিংবদন্তি পেলের পাশে বসলেন আর্জেন্টাইন তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে দলকে আবারও এগিয়ে নেওয়ার সহজ সুযোগ নষ্ট করেন চেরিশেভ। সতীর্থের পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে ঠিকমতো শট নিতে ব্যর্থ হন তিনি। এর তিন মিনিট পর আরাহোর দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সের মুখ থেকে অসাধারণ বাইসাইকেল কিকে বার্সেলোনার হয়ে প্রথম গোলটি করেন ২১ বছর বয়সী উরুগুয়ের এই সেন্টার-ব্যাক।
তিন মিনিট পর ব্যবধান বাড়িয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারতো তারা। তবে কাছ থেকে ব্রাথওয়েটের প্রচেষ্টা দারুণ ক্ষিপ্রতায় পা বাড়িযে গোললাইন থেকে ফেরান গোলরক্ষক।
আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণে জমজমাট লড়াইয়ের ৬৯তম মিনিটে সমতায় ফেরে ভালেন্সিয়া। বাঁ দিকের বাইলাইন থেকে গায়ার কাটব্যাক ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে নিখুঁত শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন গোমেস।
দুই মিনিট পর বার্সেলোনার আরেক তরুণ ডিফেন্ডার মিনগেসার বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে ফেরান ডমেনেক। খানিক পর বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে একজনকে কাটিয়ে ফিলিপে কৌতিনিয়োর নেওয়া শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। বাকি সময়েও একইভাবে চলতে থাকে আক্রমণের ঝড়। তবে উল্লেখযোগ্য কোনো সুযোগের আর দেখা মেলেনি।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]