এখনও বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেননি লিওনেল মেসি। বিশ্বসেরা ফুটবলারের পেছনে টাকার থলি নিয়ে ছুটছে ম্যানচেস্টার সিটি ও প্যারিস সেইন্ট জার্মেই। বার্সেলোনার নতুন প্রেসিডেন্ট হোয়ান লাপোর্তা ভক্তদের নিশ্চিত করেছেন মেসিকে ছাড়ছেন না তিনি।
পুরো বিষয়টিই আসলে নির্ভর করছে মেসি ও তার বেতনের ওপর। মেসি যদি বার্সাতে থাকতেও চান, তাকে কমাতে হবে নিজের পারিশ্রমিক। ক্লাবের কাছ থেকে বছরের বেতন ও বোনাস বাবদ পাঁচ কোটি ইউরো (প্রায় ৫১০ কোটি টাকা) পান মেসি। সেটাকে অর্ধেক করতে বলেছে আর্থিক সংকটে থাকা বার্সা।
ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজি অবশ্য আর্জেন্টাইন এই সুপারস্টারকে অফার দিয়েছে তাদের সঙ্গে যোগ দিলে বেতন কমাতে হবে না। বরং বোনাস বাবদ আরেকটু বেশি আয় করতে পারবেন ছয়বারের ব্যলন ডর জয়ী এই তারকা।
তবে, ফ্রান্সের ক্রীড়া ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ইউরোস্পোর্ট জানিয়েছে মেসি বার্সায় থেকে যাচ্ছেন। শিগগিরই নতুন চুক্তি সই করবেন। ইউরোস্পোর্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি একটি শর্ত দিয়েছেন ক্লাবকে।
সেটি হলো, ট্র্যান্সফার মার্কেটে সরব থাকতে হবে বার্সেলোনাকে। ক্লাবে বিশ্বমানের একাধিক খেলোয়াড় দেখতে চান মেসি। যাতে করে আগামী পাঁচ বছর ঘরোয়া শিরোপার পাশাপাশি ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের জন্যও লড়তে পারে কাতালান জায়ান্টরা।
সেক্ষেত্রে লাপোর্তা চেষ্টা করছেন নরওয়েজিয়ান তরুণ তারকা আর্লিন হালান্ডকে দলে ভেড়ানোর। চেষ্টা করছেন নেইমারকে ফেরানোর। তেমনটা হলে হয়তো থেকে যাবেন মেসি।
কিছুদিন আগে হালান্ডের এজেন্ট ও বাবা বার্সেলোনায় লাপোর্তার সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন। বৈঠকের ফল কী সেটা নিয়ে মুখ খোলেনি কোনো পক্ষই। তবে, কাতালান মিডিয়ার হিসেব অনুযায়ী হালান্ডের জন্য যে অঙ্ক দাবি করেছে তার ম্যানেজমেন্ট সেটি দেয়ার মতো সামর্থ্য আপাতত বার্সেলোনার নেই।
আর্থিক সংকটের মধ্যে বড় নামদের দলে টানতে হলে বার্সেলোনার যে তহবিল দরকার সেটির জন্য বেশ কিছু খেলোয়াড় বিক্রি করতে হবে তাদের। রোনাল্ড কুমান এরই মধ্যে জানিয়েছেন তার ভবিষ্যত পরিকল্পনায় নেই ক্লাবের কোন কোন খেলোয়াড়।
এই তালিকায় আছেন বার্সেলোনা ক্লাব ইতিহাসের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় ফিলিপে কোতিনিয়ো, ডিফেন্ডার সামুয়েল উমতিতি, স্ট্রাইকার মার্টিন ব্র্যাথওয়েইট ও উঠতি মিডফিল্ডার পেদ্রি। বার্সা ম্যানেজমেন্টের আশা এদের বিক্রি করে পর্যাপ্ত তহবিল উঠে আসবে। আর নেইমারকে আনতে হলে উসমান ডেম্বেলে বা আঁতোয়া গ্রিজমানকে ছেড়ে দিতে রাজি বার্সা।
সবমিলিয়ে মেসিকে দলে রাখা ও ইউরোপে প্রাধান্য ফিরে পাওয়ার মতো দল তৈরি করার চ্যালেঞ্জ একসঙ্গে নিতে হচ্ছে লাপোর্তা, কুমান ও বার্সা বোর্ডকে। গত কয়েক মৌসুমের মতো দলবদলের বাজারে নিষ্ক্রিয় থাকলে তাদের সামনে ইউরোপে মাঝারি মানের দলে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি থাকছে সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে হারানোর ঝুঁকিও।