দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানী খাতুনের লাশের সেই দৃশ্যের কথা আমরা ভুলতে পারি না। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কিশোরী ফেলানী খাতুনকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। আজ ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পূর্ণ হলেও এখনো ন্যায়বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।
কেবল ফেলানীর লাশই নয়, সেই ধারাবাহিকতায় আরও অসংখ্য মানুষের লাশ দেখেছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে ফেলানী খাতুন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালে স্বর্ণা দাস—সীমান্ত হত্যার সবটাই যেন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট নজির। একটা রাষ্ট্র তার প্রতিবেশী নাগরিকের ওপর বছরের পর বছর এ হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কবে নাগাদ শেষ হবে এই জুলুম?
১৫ বছর বয়সী কিশোরী ফেলানী কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে তার বাবার সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন। কাঁটাতার পার হওয়ার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। তার লাশ দীর্ঘসময় ঝুলে ছিল কাঁটাতারের বেড়ায়।
কাঁটাতারে ঝুলে থাকা কিশোরী ফেলানী খাতুনের লাশ প্রবল আলোড়ন তুলেছিল দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এমন চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে শাস্তি হয়নি ফেলানীকে হত্যাকারী ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ সদস্যের। বিএসএফের আদালত তাঁকে বেকসুর খালাস দেয়। এরপর মামলা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে গড়ালেও ফেলানী হত্যার বিচার হয়নি আজও।
বিচার না পেয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ ফেলানীর মা জাহানারা বেগম। ফেলানীর মা বলেছিলেন, এমনভাবে কেউ যেন তার সন্তান না হারায়। সীমান্তে একটি পাখিও যেন বিএসএফের হাতে মারা না যায়।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘আমি দুবার ভারতে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। কিন্তু আজও ন্যায়বিচার পাইনি। যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন এই লড়াই চালিয়ে যাব।’ ছোট ভাই জাহান উদ্দিন বলেন, ‘১৪ বছর পার হলো। কিন্তু আমার বোনের হত্যার বিচার এখনো হয়নি। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই, যেন এই হত্যাকাণ্ডের কঠোর বিচার হয়।’