রেদোয়ান হাসান সাভার,ঢাকা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ ঢাকার অদুরে সবুজ ও গ্রামের আবহে ঘেরা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভুমি বিরুলিয়া। যেখানে ইউনিয়নবাসীর প্রশান্তির শ্বাস ফেলার কথা। কিন্তু এই বিরুলিয়া যেন আতঙ্কের জনপদ। ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের কাছে যেন অসহায় বিরুলিয়াবাসী। তবে চাঁদাবাজির অভিযোগে হাজতবাসসহ প্রতিনিধিত্ব হারালেও কৌশলে আবারও বাগিয়ে নিয়েছেন চেয়ারম্যানের আসন। বিরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হন সাইদুর রহমান সুজন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। দখলবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী বাহিনী লালন করে ত্রাসের সৃষ্টিসহ বন বিভাগের জমিতে থাবা মেরেছেন এই ভুমিদস্যু চেয়ারম্যান। তবে আবারও মনোনয়নের আশায় বর্তমানে পার করছেন শান্ত সময়।অনুসন্ধানে জানা যায়, সাইদুর রহমান সুজন চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বাহিনী। যার নেতৃত্বে আছেন তারই চাচাতো ভাই মামুন ও আপন ভাই মিরাজসহ ভাগনে শাহিন। তাদের মাধ্যমেই তিনি চাঁদাবাজির রাজত্ব পরিচালনা করেন। বেগতিক হলে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে সবকিছু সামলে নেন তিনি। সুবিধা করতে না পারলে আপোষ মিমাংসার ব্যবস্থা করেন। সেখানেও রয়েছে অর্থের বিনিময়।এছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রায় দেড় হালি মামলাসহ অভিযোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য লতার মা হত্যা। যদিও অর্থ ও পেশী শক্তির প্রভাব খাটিয়ে ঘটনা মিমাংসা করা হয়। বন বিভাগের জমি দখলের অভিযোগ চলতি বছরের ১১ এপ্রিল, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর চাদাঁবাজির মামলায় গ্রেফতার হন তিনি ও একই বছরের ১৩ নভেম্বর এক কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন, জেল হাজত থেকে বের হওয়ার পর থেকে তিনি শান্ত রয়েছেন। কিন্তু থেমে নেই তাঁর রাম রাজত্ব। তার গঠিত বাহিনী দিয়ে বর্তমানে এসব চাঁদাবাজি টিকিয়ে রেখেছেন। ত্রাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে রেখেছেন গোটা ইউনিয়নে। তবে আসন্ন ইউপি নির্বাচন শেষ হলেই সম্মুখে আসার আশঙ্কা রয়েছে তার। তিনি কিছুই মানেন না, চাঁদা না দিলে কেউ বাড়ি নির্মাণ করতে পারেন না। জমি দখল করে রাতারাতি টাকাওয়ালা হয়েছেন তিনি। তার সম্পদ ও আয় ব্যায়ের হিসাব নিতে দুদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।সাভারের বিরুলিয়ার খেয়াঘাট এলাকায় মুকতি নামের এক ব্যক্তির জমিতে সাইনবোর্ড দেন চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা। তবে তেমন সুবিধা করতে পারেন নি। অবশেষে সাইনবোর্ড অপসারণ করতে বাধ্য হন তিনি। এরকম একজন ভুক্তভোগী হায়দার। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই সুজন আমার নিকটাত্মীয়। সে আমার ভাতিজা হয়। গত নির্বাচনের আগে জমি বিক্রি করে নির্বাচন করেছে। তবে চাঁদাবাজি ও জমি দখল করে নির্মাণ করছেন আলিশান বাড়ি। সে আমার ভাতিজা হয়ে আমায় হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। তবে কোনমতে জানে বেঁচে আমি বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াই। ভয়ে বাড়িতেও যেতে পারি না। আমি তার চাচা হয়েও কোনরকম ছাড় পাইনি। এলাকাবাসী তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তবে ভয়ে মুখ খোলে না কেউ।এব্যাপারে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।