ফুলতলা প্রতিনিধি:খুলনা জেলার খানজাহান আলী থানাধীন শিরোমণি বিসিক শিল্প নগরীর হ্যামকো গ্রুপ কোম্পানির ব্যাটারির সীসা গালানো ফ্যাক্টরির বিষাক্ত ধোঁয়াসহ বাতাস ও পরিবেশ দূষণকারী গন্ধে নিঃশ্বাস ভারী হয়ে শিশুসহ কোমলমতি শিক্ষার্থী এবং সাধারণের জীবন বিপন্ন প্রায়। এতে রয়েছে মৃত্যুর ঝুঁকি। সরে জমিনে তদন্তপূর্বক এবং একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, আটরা গিলাতলা ইউনিয়নের শিরোমণি বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত হ্যামকো গ্রুপ কোম্পানির বিষাক্ত ব্যাটারির সিসা গালানোর কারখানা রয়েছে। যা একই মালিকের ভিন্ন নাম দিয়ে বিষাক্ত এ সীসা কারখানা পরিচালিত হয়ে আসছে কয়েক বছর ধরে। সীসা ফ্যাক্টরীর উত্তর পাশে রয়েছে জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্টের সেনানিবাস ও গিলাতলা আলিয়া মাদ্রাসা, হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ও গিলাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান গুলোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দির্ঘকাল শিক্ষা অর্জন করে আসছে । এখানে রয়েছে অনেকগুলি জামে মসজিদ ও এতিমখানা, রয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অফিস। হ্যামকোর সীসা ফ্যাক্টরির পূর্বে রয়েছে আর্মি ইউনিভার্সিটি এবং দক্ষিণে পুলিশ হেডকোয়ার্টার, আর্ম ব্যাটালিয়ন ও ঐতিহ্যবাহী শিরোমনি বাজার এবং শিরোমণি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রয়েছে খানজাহান আলী আদর্শ মহাবিদ্যালয় এবং খানজাহান আলী থানা(কেএমপি)। পশ্চিমে শিরোমনি গ্রাম ও অনেক ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং পূর্বে কেডিএ আবাসিক এলাকা। রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অফিস আদালত। পরিবেশ দূষণকারী সীসা গালানোর বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসে এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালতসহ সাধারণ মানুষের জীবনের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
পরিবেশ দূষণকারী এজাতীয় ফ্যাক্টরির বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত অ্যাসিড জ্বালানোর পর গ্যাসের দুর্গন্ধ বাতাসের সাথে পরিবেশ দূষণ করে মানুষের নিঃশ্বাসে মিশে শ্বাসকষ্ট সহ ভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যুবরণ করছে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। এলাকার শিশুসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে , দিনে ক্লাস চলাকালীন এবং রাতে পড়ার টেবিলে ওই বিষাক্ত ধোঁয়া এবং গ্যাসের দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের নাকে মুখে যেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ।বিশেষজ্ঞদের মতে সিসা উচ্চ তাপমাত্রায় গলানোর সময় সহযোগী হিসেবে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর যৌগ উৎপাদিত হয়। যার প্রভাবে মানুষের মধ্যে এজমা, চোখের রোগ, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়াতে সহায়তা করে।
সীসার বিষক্রিয়া শিশুদের জীবনভর শিক্ষাগ্রহণে অসামর্থ্য করে তোলাসহ তাদের স্বাস্থ্য ও বিকাশের উপর মারাত্মক ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে এবং এর কারণে বড় হওয়ার পর তাদের আয়ের সক্ষমতাও কমে যায়। বিপজ্জনক ধাতব বর্জ্য ও সীসার দূষণ এবং এর কারণে শিশুদের মারাত্মক ক্ষতি সাধন হতে হয় “।
এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থী, খেটে খাওয়া মানুষ, সরকারী- বেসরকারি অফিস আদালতের কর্মচারী কর্মকর্তাদের দাবি অতি দ্রুত পরিবেশ দূষণকারী বিষাক্ত সীসা গালানোর ফ্যাক্টরি অপসারণ করে মৃত্যুর ঝুঁকি কমানো এবং সাধারণ মানুষ যাতে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে তার সুব্যবস্থা করা। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অত্র এলাকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।