1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন

বোনের প্রতারণায় নিঃস্ব লক্ষ্মীপুরের শহীজল

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ১৫ মে, ২০২২

মোঃ আকরাম হোসাইন,লহ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি : ভাতিজাকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাবে এমন আশ্বাস দিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে স্বজনসহ দীর্ঘদিন মেহমান হিসেবে অবস্থান করে বোন। এসময় অভিনব প্রতারণা করে নিজের আপন ভাই থেকে হাতিয়ে নেন ৪ লাখ টাকা । পরে সিঙ্গাপুর ফ্লাইট সাজিয়ে  ভাতিজাকে বিমানে চড়িয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে লাপাত্তা সেই প্রতারক বোন ও তার সংঘবদ্ধ স্বজন। জানাজানি হলে এ ঘটনায়  এলাকায় তোলপাড় হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নের ৮নং ওর্য়াড বটগাছতলা এলাকার জেলে শহীজল মাঝির বাড়িতে। বোন আলেয়া বেগম ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার কুদবা ইউনিয়নের কুদবা গ্রামের পল্লী পশু চিকিৎসক বশির আহমেদের স্ত্রী।
এ ঘটনায় প্রতারক বোন আলেয়া বেগমসহ ৬ জনের নামে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন প্রতারিত ভাই শহীজল মাঝি। শনিবার (১৪ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবি এডভোকেট মুনসুর আহমেদ দুলাল। এর আগে গত ৯ মে তারিখে মামলা দায়ের করা হয়। তার আগে ২৮ এপ্রিল শহীজলের ছেলে জুয়েলকে সিঙ্গাপুর নেবার কথা বলে বিমানে চড়িয়ে নেয়া হয় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম। ঘটনার সাথে শহীজলের বোন আলেয়া, তার ছেলে আওলাদসহ  আত্মীয় পরিচয়ের আরো ৪জন জড়িত ছিল।
এদিকে ঋণ ও দেনা করে বোনকে দেয়া  ৪ লাখ টাকার চিন্তা এবং পাওনাদারদের ভয়ে দিশেহারা ভুক্তভোগী জেলে শহীজল মাঝি।
বোনের প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী শহীজল মাঝি জানায়, বোন আলেয়া বেগম দীর্ঘদিন তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেনি। বাবা মরে যাওয়ার খবর শুনেও আসেনি। অবেশেষে ঘটনার ছয় মাস আগে ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার কুদবা  গ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন গ্রামে মেহমান হিসেবে ছুটে আসে বোন আলেয়া। দীর্ঘ  প্রায় ৩০ বছর পর বোনকে কাছে পেয়ে সাধ্য মতো আদর সমাদর করেন জেলে শহীজল মাঝি ও তার পরিবার।
নিজের অভাবের সংসারে বোনের জন্য আদর যত্নের কমতি রাখেনি শহীজল। বোনের কয়েক দিন পর শহীজলের বাড়িতে বেড়াতে আসে আলেয়ার ছেলে ভাগিনা আওলাদ হোসেন। ভাগিনাকেও বাড়িতে রেখে সমাদর করে শহীজলের পরিবার।
ভাগিনা আসার ২ দিনের মধ্যে বোন আলেয়া জানায়, তার ছেলে আগের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিছে। এখন ছেলেকে লক্ষ্মীপুর জেলায় ২য় বিয়ে দিতে চান। বোনের আবদারে ভাগিনার জন্য পাত্রী দেখে কয়েক দিনের মধ্যে বিয়ে দেন শহীজল ও তার পরিবার।
ভাগিনার ২য় বিয়ের ২/৩ দিন পর বোন আলেয়া শহীজলকে আবার জানায় ছেলের আগের শ্বশুর ছেলের জন্য সিঙ্গাপুরের একটা ভিসা দিয়েছে এখন ২/৩ দিনের মধ্যে ছেলে সিঙ্গাপুর চলে যেতে হবে। তবে খরচের জন্য ৪ লাখ টাকা লাগবে। সে টাকা ২য় শ্বশুর বাড়ি থেকে নিয়ে দিতে হবে। বোনের কথায় ভাগিনার ২য় শ্বশুর বাড়ি থেকে ৪ লাখ টাকা নেয় ভাগিনা। টাকা নেয়ার পরের দিনই ভাগিনা আওলাদ শহীজলদের বাড়ি থেকে সিঙ্গাপুরের কথা বলে বিদায় নেয়। মামার বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার একদিন পর ভাগিনা বিদেশী নাম্বারের মতো নাম্বার তৈরি করে শহীজলদের ফোনে কল দিয়ে  জানায় সে সিঙ্গাপুর এসেছে। এখন শহীজলের ছেলে জুয়েলকে ও সিঙ্গাপুর নিতে চায়। মা আলেয়ার সাথে শহীজলকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করে।
এদিকে বোন আলেয়া তার ভাই শহীজল মাঝির ছেলে জুয়েলকে সিঙ্গাপুর নেয়ার জন্য ১২ লাখ টাকা দাবি করে। পরে ৯ লাখ টাকায় সমঝোতা হয়। যার মধ্যে শহীজল দিবে ৫ লাখ বাকি ৪ লাখ টাকা বোন আলেয়া দেবে বলে সে ভাইকে জানায়। এবং ভাইকে তড়িঘড়ি করে টাকা দেয়ার কথা বলে। ভাগিনা আওলাদ ও বিদেশি নাম্বারের মতো নাম্বার দিয়ে শহীজলকে বারবার ফোন দিয়ে টাকা দিতে বলে।
শহীজলের ছোট ভাই মাহে আলম জানায়, ভাগিনা আর বোনের চাপাচাপিতে তার বড় ভাই শহীজল মাঝি ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পাগল হয়ে যায়। সে টাকা নেয়ার জন্য ঋণ খোঁজে। বোন আলেয়াও শহীজলকে ঋণ নেয়ার পরামর্শ দেয়। বোনের কথা মতো শহীজল এনজিও কোডেক থেকে  ১ লাখ টাকা, তিন মেয়ের জামাইদের থেকে  আড়াই লাখ এবং নিজের ৫০ হাজার সহ মোট ৪ লাখ টাকা  জোগাড় করে।
টাকা জোগাড়ের একদিন পর ২৯ এপ্রিল জুয়েলের সিঙ্গাপুরের ফ্লাইট আছে বলে জানায় বোন আলেয়া।  ওই দিন সকালে নগদ চার লাখ টাকাসহ বোন আর ছেলেকে নিয়ে ঢাকার বিমান বন্দরে রওনা হয় শহীজল মাঝি। বিমান বন্দরে আসার পর তার বোন আলেয়া  সানী নামের একজনের ব্যাগে টাকা দেয়ার জন্য বলে। সানীকে টাকা দেয়ার পরপরই সানী শহীজলের ছেলে জুয়েলের  হাতে একটি বিমান টিকেট ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত গিয়ে বিমানে ওঠতে বলে।
শহীজলের ছেলে  জুয়েল জানায়, সে বিমান বন্দরের ২টি গেট অতিক্রম করার পরপরই তার সাথে দেখা হয় ২ দিন আগে সিঙ্গাপুর যাওয়া ফুফুতো ভাই  আওলাদের । ফুফাতো ভাইকে ঢাকা বিমান বন্দরে পেয়ে জুয়েল থমকে যায়। এরপর ফুফাতো ভাই ভয় দেখিয়ে তাকে বিমানে ওঠায়। সেও ওঠে।  কিছুক্ষণ পর বিমান ছেড়ে দেয়। তার ঘন্টাখানেক পর বিমান চট্টগ্রাম নামে।

চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে শামীম নামের আরো একজন অপেক্ষা করে। তারা জুয়েল কে নিয়ে একটি হোটেলে ওঠে। হোটেলে কক্ষে নিয়ে আওলাদ ও শামীম মিলে জুয়েলকে অস্ত্র দেখিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখায় এবং তাদের কথা মতো চলার নির্দেশ দেয়। তার হাতে ফোন ধরিয়ে দিয়ে বাড়িতে ফোন করে সিঙ্গাপুর পৌঁঁছেছে বলে বাবার নিকট সিঙ্গাপুরের পরিচয়পত্রের জন্য তার ফুফুকে আরো দেড় লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে।
জুয়েল জানায়, সকালে  হোটেলের এক ব্যক্তির ফোন থেকে সে বাড়িতে আবার ফোন দিয়ে সঠিক ঘটনা তার বাবাকে জানায়। বাড়িতে ফোন দেয়ার কিছুক্ষণ পর ভাগিনা ও তার চট্টগ্রামের সহযোগি শামীম চট্টগ্রাম থেকে তাকে আবার বাস যোগে ঢাকায় নিয়ে আসে। পরে ঢাকার সায়েদাবাদ ফেলে রেখে তারা দুজন লাপাত্তা হয়ে যায়।শহীজলের প্রতিবেশী আবদুল হালিম জানায়, বোন এবং ভাগিনার সংঘবদ্ধ প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হওয়ার খবর পেয়ে এখন স্থানীয়ভাবে দায় দেনা করে যে ৪ লাখ টাকা নিয়েছিল শহীজল  এখন সে টাকা পরিশোধের জন্য এখন পাওনা দারেরা চাপ দিচ্ছে। টাকার জন্য এক মেয়ের জামাই তার মেয়েকে শহীজলের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। অন্য জামাইরাও চাপাচাপি করছে।এ ঘটনায় গত ৯ মে তারিখে শহীজল মাঝি বাদী হয়ে প্রতারণা ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে নিজের বোন আলেয়া বেগম, ভাগিনা আওলাদ হোসেন, আওলাদের শালা সানী, ভাগ্নি জামাই শামীম, ভাগিনা বৌ আয়েশাসহ ৬জনকে আসামি করে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরর পর আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।এলাকার স্থানীয়রা জানায়, এমন নিষ্ঠুর আর নির্মম বোন যেন কারো ভাগ্যে না জুটে । আলেয়া নামের সংঘবন্ধ এ অপরাধী চক্রকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেন দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে  এমন প্রত্যাশা করেন স্থানীয়রা।
Facebook Comments
১৬ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি