বিশেষ প্রতিনিধি, জয়পুরহাট : আজ ৩০ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতির ৪ বছর কালো দিবস পালন বাম গণতান্ত্রিক জোট। বামজোটের অভিযোগ ২০১৮ সালের এই দিনই আওয়ামী সরকার দিনের ভোট রাতে সিল মেরে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে। গায়ের জোরে ক্ষমতা দখলকারী সরকার টানা ৪ মেয়াদে দেশের মহা সর্বনাশ করে চলেছে।জনসমর্থনহীন সরকারের দুর্নীতি-দুঃশাসন ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে কবরে পাঠিয়েছে এবং নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জয়পুরহাটেও ভোট ডাকাতির কালো দিবস পালিত হয়েছে।শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় জেলা শহরের বাসদ কার্যালয় থেকে কালো পতাকার মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পাঁচুরমোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা বাম জোটের সমন্বয়ক এম এ রশিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদের আহ্বায়ক ওয়াজেদ পারভেজ, জেলা সিপিবি’র সভাপতি দেওয়ান মোহাম্মদ বদিউজ্জামান বদি, বাসদ সদস্য সচিব সামিউল ইসলাম বাবু, পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক সুধারাম বাবু হিটলার, জেলা ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম প্রমূখ।বক্তারা বলেন, ৪ বছর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আমলা-পুলিশ ও দলীয় গুন্ডাদের দিয়ে দিনের ভোট রাতে সীল মেরে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের প্রতিও তাদের কোন দায়বোধ নাই। ফলে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়ে সরকার দেশে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও লুটপাট কায়েম করেছে। চাল, ডালসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনজীবন দিশেহারা। সিন্ডিকেটের কাছে জনগণ জিম্মি। গুম, খুন, ধর্ষণ, নারী-শিশু নির্যাতন মাত্রা ছাড়িয়েছে। নিবাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে গণতন্ত্রের কবর রচনা করে সরকার দেশে ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। ক্ষমতায় না থেকে নির্বাচন করে জয় লাভের কোন সম্ভাবনা থাকে না বলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে শাসকদের এতো ভয়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন এবং চলমান ইউপি নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে দলীয় সরকার তথা শেখ হাসিনা সরকারের অধিনে কোন নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।বাসদ নেতা ওয়াজেদ পারভেজ বলেন, দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। জনগণ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি। সরকার উন্নয়নের ঢাক বাজাচ্ছে। আয় বৈষম্য প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য বর্তমান ভোট ডাকাতির অবৈধ সরকারকে উচ্ছেদের সংগ্রামে সকল বাম-প্রগতিশীল শক্তি-ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।সিপিবি’র নেতা বদিউজ্জামান বদি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে দেশে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন গঠনে আজও কোন আইন প্রণয়ন করা হয়নি। সাংবিধানিক সকল সংস্থারও কোন আইনগত ভিত্তি দাঁড় করাতে পারেনি। নেতৃবৃন্দ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার না করে নির্বাচন কমিশন যতো শক্তিশালীই হোক না কেন সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন। তাই সকল দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আইন প্রণয়ন করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানান।বাম জোটের সমন্বয়ক এম এ রশিদ বলেন, অবিলম্বে ভোট ডাকাতির সংসদ বাতিল, অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন তদারকি সরকারের অধিনে নির্বাচন ও নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার দাবি করেন। একই সাথে সকল বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার উচ্ছেদ করে গণদাবি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।