জুলফিকার তালুকদার চরফ্যাশন প্রতিনিধি:ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার, দক্ষিণ আইচায় অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজ, জামে মসজিদের ওপর দিয়ে ১১ হাজার ভোল্টেজ এর পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন থাকায় প্রায় ছয়মাস যাবত আটকে আছে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ের মসজিদ নির্মাণের কাজ। সঠিক সময় নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছে অত্র মসজিদের মুসল্লীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১১ হাজার ভোল্টেজের পল্লী বিদ্যুৎ লাইনটি চরফ্যাশন টু দক্ষিণ আইচা মহা সড়কের ৩০ ফুট দূর দিয়ে স্থাপন হয় ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। অন্যদিকে দক্ষিণ আইচায় লেখা পড়ায় পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষিণ আইচার, চর আইচা গ্রামে, ‘দক্ষিণ আইচা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম নামে কলেজ প্রতিষ্ঠাতা করেন ভোলা ৪ আসনের সাংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। কলেজ প্রতিষ্ঠাতা করার পরপরই ওইখানে থাকা পুরোনো মসজিদকে উন্নতি করার লক্ষ্যে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ তলা পাকা মসজিদ ভবনের অনুমোদনও করান তিনি। মসজিদের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলে ওই সময়ই মসজিদের সীমানার ভেতরে পড়ে ৫ থেকে ৬ টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। লাইনটি সরানোর জন্য কলেজ ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ আইচা পল্লী বিদ্যুৎ সাব-জোনাল অফিস বরাবর লিখিত আবেদন করলেও কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। এদিকে বিদ্যুতের লাইন না সরানোর কারনে দায়িত্বরত ঠিকাদার সঠিক সময়ে মসজিদের কাজটি সম্পন্নও করতে পারছে না। এতে প্রায় ছয়মাস যাবত আটকে রয়েছে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ের মসজিদ নির্মাণ কাজ।
দক্ষিণ আইচা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাশেম মহাজন জানান এই বিদ্যুৎ লাইন থাকার কারণে দৃষ্টিনন্দন মসজিদের নির্মাণ কাজ আটকে আছে এবং কলেজের সৌন্দর্য বর্ধনের অন্তরায় এমনকি কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা মাঠে প্রতিনিয়ত খেলাধুলা করেন বিদ্যুৎ লাইনের তারের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে যে কোন মুহূর্তে।
মসজিদের একাধিক মুসুল্লিরা বলেন, বিদ্যুৎ লাইন গেছে মসজিদের নতুন ভবনের ওপর দিয়ে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলা হলেও লাইনটি সরাচ্ছে না। পুরোনো মসজিদেও নামাজ আদায় করা যাচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুতের গাফিলতিতে নতুন ভবনের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। ১১ হাজার ভোল্টের লাইনটি সরানো হলে মসজিদ নির্মাণের কাজ দ্রুতই শুরু হবে। এ সময় তারা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে লাইনটি অপসারণের দাবী জানান।
মসজিদ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম ফরাজি বলেন, নতুন মসজিদ পাকা করণ ভবনের ওপর দিয়ে যাওয়া দুই পাশেই বিদ্যুতের খুঁটি ও ১১ হাজার ভোল্টেজের সঞ্চালন লাইন রয়েছে। লাইনটি সরানোর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ অফিস বরাবর কলেজ ও মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ সেটি সরাচ্ছে না। ভবন নির্মাণের কাজ দেয়া ঠিকাদার দুর্ঘটনার ভয়ে কাজ রেখে চলে গেছে। এতে প্রায় ৬ মাসের অধিক সময় মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এবং নির্মাণ সামগ্রী গুলোও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই দায়ভার কে নিবে বলে জানান তিনি।
উপজেলার দক্ষিণ আইচা পল্লী বিদ্যুত সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানাজার জিয়াউর রহমান বলেন, কলেজ ও মসজিদ কর্তৃপক্ষের আবেদনটি পেয়ে সাথে সাথেই সরজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে আসছি। ঠিকাদারকে কাজটি দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই লাইনটি স্থানচ্যুত করা হবে বলে জানান তিনি।