দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক: ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে মনোনয়নকালে তিনি কানাডার নাগরিক ছিলেন বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রেও তাঁর দেওয়া তথ্যাদি যথাযথ ছিল না। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। এমন ব্যক্তির ডব্লিউএইচওর সম্মানজনক পদে দায়িত্ব পালন করাটা দেশের জন্য মর্যাদাহানিকর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানে এসব তথ্য পেয়েছে দুদক। আজ রোববার দুদকের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে জানানো হয়।দুদক সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর ৭৬তম সম্মেলনে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করে শতাধিক কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদল উপস্থিত হয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে সায়মা ওয়াজেদ নিজের পারিবারিক প্রভাব ও তাঁর নিকট আত্মীয়দের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারের বিপুল অর্থ ক্ষতিসাধন করেছেন। তিনি পারিবারিক রাজনৈতিক ক্ষমতা অপব্যবহার করে বেআইনিভাবে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।এ ছাড়া সূচনা ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সায়মা ওয়াজেদ বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে উপঢৌকন ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় অটিস্টিক সেলকে ব্যবহার করে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি। দুদক সূত্র আরও জানায়, সায়মা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে সূচনা ফাউন্ডেশন নামে প্রাপ্য অর্থ করমুক্ত করিয়ে নেন।
আজ বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দালিলিক প্রমাণাদি সংগ্রহের জন্য অনুসন্ধানের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সেখান থেকে তথ্য পেলে তাঁরা পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।
সাময়া ওয়াজেদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে আক্তার হোসেন বলেন, ‘সরকারি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সরকারি কর্মচারী হিসেবে ও বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তিনি কী কী সুযোগ–সুবিধা পাবেন, কী কী কাজ করতে পারবেন—এ–সংক্রান্ত নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের পক্ষেই ডব্লিউএইচওর দায়িত্ব পালন করছেন। আপনি যখন রাষ্ট্রের হয়ে কোনো সরকারি দায়িত্ব পালন করবেন, সেখানে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’দ্বৈত নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে আইনি কোনো ঝামেলা রয়েছে কি না, জানতে চাইলে আক্তার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে বলবেন।