সোহেল রানা, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি ও বিনামূল্যে সরকারি প্রণোদনার সার এবং উন্নত জাতের বীজ পেয়ে চলতি মৌসুমে সরিষা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে অনাবিল আনন্দ। যেন সরিষার হলুদ হাসিতে স্বপ্ন বুনছেন তারা। আগামীতে সরিষার চাষাবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি করছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। এবার সরিষা চাষিরা অধিক মুনাফা লাভ করবে বলেও দাবি করেন তারা।কয়েক বছর থেকে ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে কৃষি বিভাগ। উন্নত জাতের সরিষা ৫৫-৬০ দিনে ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো ধান আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রবি ২০২১-২০২২ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এক হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে আবাদ হয়েছে এক হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮৫ হেক্টর বেশি। সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রণোদনা হিসেবে চাষিদের উন্নত জাতের বীজ, ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও এমওপি (মিউরেট অফ পটাশ) সার সরবরাহ করেছেন।উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের রুহুল কবীর, আমিনুল ইসলাম ও আব্দুর রহমানসহ ১৫-২০ জন সরিষা চাষি বলেন, ‘আমন ধান কাটার পর জমি তৈরি করে সরিষা আবাদ করা হয়। এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করতে খরচ হয় ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ৯ মণ ফলন পাওয়া যায়। জমিতে সরিষা চাষের সময় সার প্রয়োগ করলে বোরো রোপণের জন্য আলাদাভাবে সার দিতে হয় না।’মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ‘পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে কৃষকদের দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা সরিষা উত্তোলন করে বোরো আবাদ করতে পারেন বলে এটাকে ‘ফাও ফসল’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। সরিষা আবাদের পর জমিতে বোরো ধান আবাদে সারের পরিমান খুবই কম লাগে।