পুত্র হত্যার বিচার না পেয়ে শোকে কাতর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার মৃত্যু হয়েছে। ঐ মুক্তিযোদ্ধার নাম আবু জাফর ছিদ্দিকী। বাড়ি মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীর জাগিরাঘোনা গ্রামে। ১৫ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩ টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার।
নিহতের স্ত্রী মাসুদা খাতুন বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার বড় ছেলে মনোয়ার কায়সার ছিদ্দিকী রুবেলকে নিজ বাড়িতে নির্মম ভাবে হত্যা করে। এখনো পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিচার পেতে আমার স্বামী সহ আমরা বিভিন্ন দরজায় দরজায় ঘুরেছি দীর্ঘদিন। এক পর্যায়ে পুত্র হত্যার বিচার না পেয়ে শোকে আমার স্বামী অসূস্থ হয়ে পড়ে এবং মারা যান।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর ছিদ্দিকীর মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠে। যাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীনতা পেয়েছে, স্বাধীনতার এত বছর পরেও সেই মুক্তিযোদ্ধারা বিচার প্রার্থী হয়ে মানুষের দরজায় কড়া নাড়ে। আর পুত্র হত্যার বিচার না পাওয়ার আক্ষেপে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই লজ্জা পুরো বাঙ্গালীর। এর তীব্র সমালোচনা করে রুবেল হত্যার আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানান সচেতন মহল। স্থানীয়দের অনেকেই ধারণা মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর পুত্র হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে চিন্তিত ছিলো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যার ফলশ্রুতিতে উনার মৃত্যু হয়েছে এমনটাই অভিযোগ উঠে আসছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২৪ জুন সন্ধ্যা ৭টায় বড়মহেশখালীর জাগিরাঘোনা নিজ বাড়ীতে সন্ত্রাসী সিরাজ, আলম পাশা, জাহাঙ্গীর, শাহ আলম সহ একদল অস্ত্রধারীর হাতে নির্মম ভাবে খুন হন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর ছিদ্দিকীর বড় ছেলে মনোয়ার কায়সার ছিদ্দিকী রুবেল। ঘটনার পর থেকে এখনো পর্যন্ত পুলিশ আলোচিত কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি।
এদিকে ক্ষোভ ও আক্ষেপ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমজাদ হোসেন বলেন, রুবেল হত্যাকান্ডের পর কোন আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় গত ২৬ আগস্ট আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। তারপরেও কোন আসামী গ্রেপ্তার হয়নি। সেই শোকে আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর ছিদ্দিকী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। তার পুত্র রুবেল হত্যার শিকার হওয়ার পর আমরা কাঙ্খিত পুলিশী সেবা পাইনি। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ঘটনার ৬ মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি।
এই ব্যাপারে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুল হাই জানান, রুবেল হত্যাকান্ড তিনি থানায় যোগদানের আগে হয়েছিল। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। দ্রুত আসামীদের অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দেন তিনি।
নিহতের পরিবার সূত্রে আরো জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় উপজেলার কালারমারছড়া সোনার পাড়া গ্রামে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর ছিদ্দিকীর জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হবে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]