ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর মারিউপোলে এখনো আটকে থাকা এক লাখ বেসামরিকের ভাগ্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একাই নির্ধারণ করতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন শহরের মেয়র ভাদিম বোইচেঙ্কো। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তার দাবি, স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়া গণকবরই প্রমাণ করে মৃতের সংখ্যা লুকাতে রাশিয়ানরা মরদেহ পুঁতে ফেলছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার মারিউপোলের যুদ্ধে বিজয় দাবি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রায় দুই মাস ধরে শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখে রুশ বাহিনী। তীব্র গোলাবর্ষণের কারণে যেসব বাসিন্দারা শহর ছেড়ে পালাতে পারেনি তারা বিদ্যুৎ, তাপ এবং পানি সরবরাহহীন হয়ে পড়ে।
মারিউপোলের মেয়র বোইচেঙ্কো বলেন, ‘এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে এখনও যারা সেখানে আছে তাদের জীবন শুধু একজন ব্যক্তির হাতে – ভ্লাদিমির পুতিন। আর এই সময়ের পর যাদের মৃত্যু হবে তাদের সবাই তার হাতেই মরবে।’
পুতিন বৃহস্পতিবার বলেন রুশ সেনারা মারিউপোল ‘স্বাধীন’ করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এটাই দখল করা সবচেয়ে বড় শহর। ইউক্রেনে অভিযানের নাম মস্কো দিয়েছে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’। বেসামরিকদের নিশানা বানানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মস্কো।
বোইচেঙ্কো বলেন, ‘শহর স্বাধীনের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। এটা ছিল ধ্বংসের পরিকল্পনা।’ তার ধারণা, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর মারিউপোল শহরের ৯০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা ধ্বংস হয়েছে।
বোইচেঙ্কো বলেন, ‘আজ সব পর্যায়ে, আমরা শুধুমাত্র একটি বিষয় নিয়ে কথা বলছি, আমাদের যুদ্ধবিরতি দরকার, রুশ বাহিনীর হাতে বন্দি মারিউপোলের এক লাখ বাসিন্দাদের সম্পূর্ণ সরিয়ে নেওয়া দরকার এবং আজভস্টলে থাকা সব মানুষকে মুক্ত করতে হবে।’
রুশ বাহিনী মারিউপোলের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করলেও ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের একটি দল শম শত বেসামরিককে নিয়ে আজভস্টল স্টিল কারখানার বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছে। পুতিন তাদের আত্মসমর্পণ কিংবা মৃত্যু যেকোনো একটা বেছে নিতে বলেছেন।
মেয়র বোইচেঙ্কো বলেন, ‘সেনারা আত্মসমর্পণ করতে চায় না। তারা সরে যেতে চায় কেবল অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে আর আমাদের মাতৃভূমি, আমাদের ইউক্রেন রক্ষা করে যেতে চায়।’
খবর রয়টার্স