রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || শনিবার | ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
মায়ের লগে একটু কথা কইবারও দিছে না
রাকিবুল হাসান, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : মায়ের জন্য কান্না করতে করতে শিশুটি বলেন, ‘আমার মারে মাইরা ফেলছে। আমারে আমার মায়ের লগে একটু কথা কইবারও দিছে না। আমার মা আমার লগে একটু কথা কইতে চাইছিলো। তারা আমার মাকে, আমার লগে একটুও কথা কইতে দিছে না। ওরা আমার মারে মাইরা ফেলছে।
রবিবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তায় লাইফ কেয়ার হাসপাতালে শিশুর মা ইয়াসমিন আক্তার (৩০) সিজার অপারেশন করার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়। ওই নারীর দশ বছর বয়সী শিশু ইকরা এসব কথা বলছিলো। ইয়াসমিন আক্তার, শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী।
নিহত ইয়াসমিনের স্বামী আসাদুল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে মাওনা চৌরাস্তা লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসি সিজার করানোর জন্য। যখন হাসপাতালে নিয়ে আসি তখন সে সুস্থ ছিলো। অপারেশন কক্ষে নিয়ে যাওয়ার পর ঘন্টার পর ঘন্টা হাসপাতালের লোকজন আমাদের অপেক্ষা করিয়েছে। তারা কিছু জানায়নি। শুধু বলছে অতিরিক্ত রক্ত বের হচ্ছে। আমরা বাইরে থেকে দেখতেছি, তারা দুই মিনিট পর পর মেডিসিন আনছে। শুনছি, অতিরিক্ত রক্ত গেছে। রক্ত যাওয়ার কারণে মারা গেছে। কি ঘটনা তার প্রকৃত কারণ জানতে হবে। তারা হাসপাতাল ছেড়ে পালাইয়া গেছে। হেরা আমার স্ত্রীকে মাইরা ফেলছে।
প্রসূতির মা রাজিয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ১২টার দিকে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানায়, মাগরিবের নামাজের পরপরই সিজার করা হবে। এই বলে হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বিদায় দেয়। শুধু তিনি হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাঁকে জানানো হয়, মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে। দৌড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে দেখেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দিয়ে তাঁরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। তাঁরা চিকিৎসককে অনুরোধ করলেও কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তাঁরা রেফার্ডের নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ তুলে দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ম্যানেজার (ব্যবস্থাপক) পারভেজ হোসেনের ব্যক্তিগত ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন পন্ডিত জানান, প্রসূতির অপারেশনের পরে মারা গেছে। মারা যাওয়ার পর উত্তেজিত জনতা হাসপাতাল ভাংচুর করেছে। আমি এখনো ঘটনাস্থলে আছি। ঘটনার তদন্তে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.