প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
আজ ১মে সকাল ১০টায় মিরপুর শিল্পাঞ্চলের কালশী নতুন রাস্তার মোড়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস- মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশন ও গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের উদ্যোগে শ্রমিকদের লাল পতাকা সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি লাল পতাকা মিছিল শিল্পাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণসড়ক প্রদক্ষিণ করে নতুন রাস্তার মোড়ে বাস স্টপেজের সামনে শেষ হয়।
জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশনের আহবায়ক শামীম ইমামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, বাংলাদেশ শ্রম ইনস্টিটিউট (বাশি)’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য গোলাম মুর্শেদ ও গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক, মিরপুর শিল্পাঞ্চল কমিটির সভাপতি মনির হোসেন।সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, ১৩৫তম মহান মে দিবসেও শ্রমিকশ্রেণী নির্মম শোষণ-পীড়ণের কারণে দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অত্যাধিক খাটুনি, কম মজুরি ও বিভিন্নভাবে হয়রানি-নির্যাতন চালিয়ে মালিকশ্রেণী শ্রমিকদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে, কিন্তু অধিকাংশ কর্মস্থলে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।
মহান মে দিবসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ৮ ঘন্টা কর্ম দিবসের অধিকার অর্জিত হওয়ার পরেও তা আমাদের দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এখনো গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদেরকে নানা অজুহাতে ১২ থেকে ১৬ ঘন্টা কাজ করানো হয়। যেখানে শ্রমিকদের জীবনীশক্তি ও উৎপাদন সক্ষমতা রক্ষার জন্য ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস বাস্তবায়ন করা জরুরি, সেখানে উল্টো সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশ শ্রম আইনের ৩২৪ ধারার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৭ এপ্রিল ২০২১ থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য কর্মঘন্টা ও ওভারটাইম ভাতা সংক্রান্ত ধারার প্রয়োগ স্থগিত করেছে। এর ফলে শ্রমিকরা আগের থেকে আরো বেশি করে শোষণ-বঞ্চনা ও হয়রানির শিকার হবে। বর্তমান করোনাকালে এই ঘোষণা শ্রমিকদের জীবন আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও নিরাপত্তাহীন করে তুলবে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শ্রম আইনের কর্মঘন্টা ও ওভারটাইম বিষয়ক ধারা স্থগিতের সরকারি প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সকল শিল্প কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানে ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস বাস্তবায়ন করা; ২০ রোজার আগে গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি-বোনাস সহ সকল পাওনাদি পরিশোধ করা; শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করা; করোনা-লকডাউন চলাকালে শ্রমিকদের ফ্রি টেস্ট, ভ্যাকসিন সহ সুচিকিৎসার ব্যবস্থা এবং করোনা আক্রান্ত শ্রমিকদের সবেতন ছুটি সহ সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার; শিল্পঘন এলাকায় ভ্রাম্যমান চিকিৎসার ব্যবস্থা করা; শ্রমিকদের জন্য সেনাবাহিনীর রেটে পূর্ণ-রেশনিং এর ব্যবস্থা করা; অবিলম্বে জীবনয়াত্রার ব্যয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি পুনঃনির্ধারণ করার- জাতীয় ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠন করে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করার এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।