মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি-মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৩য় পর্যায়ে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে গতকাল কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিং করেন ইউএনও সোহেল রানা। তিনি প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল বাংলার গরীব দুঃখী নিরন্ন মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। এ লক্ষ্যে তিনি অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি সংবিধানের ১৫ (ক) অনুচ্ছেদে অন্তর্ভূক্ত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে লক্ষ্মীপুর) চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং গৃহহীন মানুষের গৃহ নির্মাণের নির্দেশ প্রদান করেন।
তারই নির্দেশে শুরু হয় গৃহহীন পুনর্বাসন কার্যক্রম । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ১৯৯৭ সালের ২০ মে কক্সবাজার ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মানুষের দুর্দশা দেখতে গিয়ে কক্সবাজার পরিদর্শন করেন এবং গৃহহীন মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ প্রদান করেন। তাঁর নির্দেশনার প্রেেিত শুরু হয় আশ্রয়ণ প্রকল্প । মুজিব শতবর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সারাদেশের ন্যায় মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ও মুজিব শতবর্ষে তালিকাধীন ১২১ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১ম পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ২৫ টি ঘরের নির্মাণ কাজ উত্তর হাওলা ইউনিয়নের বরল্লা মৌজায় সমাপ্ত হয়েছে এবং তা উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। ২য় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ৪৮ টি ঘরের মধ্যে মান্দারগাঁও মৌজায় ০৭টি, ধোপামুড়ী মৌজায় ০৬টি, দিশাবন্দ মৌজায় ১১টি এবং বরল্লা মৌজায় ০৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং তা উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
২য় পর্যায়ের বাকী ১৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে এবং খুব শীঘ্রই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ৪৮টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেছে যার মধ্যে সরসপুর ইউনিয়নের ভাউপুর মৌজায় ১১টি এবং ঝলম উত্তর ইউনিয়নের বড় কেশতলা মৌজায় ০৬ টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক শুভ উদ্বোধন শেষে উপকারভোগীর নিকট জমি ও গৃহ হস্তান্তর করা হবে। বাকী ৩১টি ঘর নির্মাণের জন্য খাস জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। মুজিববর্ষের ঘরের গুণগত মান বজায় রাখার লক্ষ্যে চিহ্নিত ভূমি উন্নয়ন ও মাটি ভরাট পূর্বক বাকী ৩১টি ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। তিনি আরো বলেন, মুজিব শতবর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এম.পির পরামর্শ এবং কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সার্বিক নির্দেশনায় নতুন করে আরো ৫৯ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং অত্র উপজেলার সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে মনোহরগঞ্জ উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে পূর্বের ন্যায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজিয়া হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ওয়াসিম, সরশপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, মনোহরগঞ্জ প্রেসকাব আহ্বায়ক ও সাবেক সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির মানিক, যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেন, আবদুল বাকী মিলন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব ও বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক নুরুননবী চৌধুরী সেলিম, সাধারণ সম্পাদক অহিদুর রহমান, দৈনিক প্রতিদিন সংবাদের প্রতিনিধি আকবর হোসেন, দৈনিক গণকন্ঠের মোঃ সাকিব, দৈনিক বাংলার আলোড়নের মোঃ সাইফুল ইসলাম শিমুল প্রমুখ।