প্রিন্স আরিফ খান, মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি:তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করেও ঈদ আনন্দ উল্লাসে মেতেছে বিভিন্ন শ্রেনী ও পেশার মানুষ। এক মাস সিয়াম পালনের পর ঈদের দিন বিকেল থেকে উপচেপড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। ঈদের দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিনে বিনোদন কেন্দ্র গুলি ভ্রমণ পিয়াসু মানুষের ভীড় উপচেপড়া। স্বামীর হাত ধরে নববধূ, প্রেমিকার হাত ধরে প্রেমিক, আাবার পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরছেন একটু বিনোদনের জন্য।
মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে ঘুরতে এসেছেন চুয়াডাঙ্গার তানভীর হুসাইন। সদ্য বিয়ে করেছেন তিনি। এটিই নববধূ পেয়ে প্রথম ঈদ। বউয়ের বায়না মেটাতে প্রথম বেড়াতে এসেছেন মুজিবনগরের ঐতিহাসিক স্থানে।
তিনি জানান, তীব্র গরমে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। ঈদের আগের দিন থেকে মেহেরপুরের আবহাওয়া অনেকটা কমে মানুষের মধ্যে সস্তি এসেছে। বিকেলে ঘুরতে এসে অনেক পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হচ্ছে। ঈদের শুভেচ্ছাও বিনিময় হচ্ছে।
আমঝুপি নীলকুঠিবাড়তে ঘুরতে আসা নববধূ মধুমিতা জানায়,রমজান মাসের এক সপ্তাহ আগে তার বিয়ে হয়েছে। অন্যান্য বার ঈদের আনন্দ উপভোগ করতেন পিতা-মাতা ভাই-বোনদের সাথে। এবার তার স্বামীর সাথে ঘুরতে এসেছেন নীলকুঠিবাড়িতে। এখানে ঘুরতে এসে নাগরদোলায় চড়েছেন,ইলেকট্রিক চরকিতে ঘুরেছেন, চড়েছেন কেবল কারেও। স্বামীর সাথে বায়না ধরে কিনেছেন নানা ধরনের খেলনাপাতি।
ভাটপাড়া জেলা প্রশাসক ইকোপার্ক ঘুরে দেখা মেলে কয়েক হাজার দর্শনার্থী। দর্শনার্থীদের ভিড়ে পরিপুর্ণ পার্কে মানুষ বিভিন্ন ভাবে বিনোদন নিচ্ছে। কথা হয় মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহযোহী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিনের সাথে। তিনি জানান, ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উল্লাস, ঈদেরছুটিতে ঘর বন্দী হয়ে থাকতে চায়না মন। ছেলে মেয়েরাও বায়না ধরে ঘুরতে যাওয়ার। ছেলে মেয়ের আবদার এছাড়াও স্থানীয় পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হবে,কথা হবে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে ইকোপার্কে এসেছি। এখানে কয়েক হাজার মানুষ এসেছে। তবে মেহেরপুরের অনেক বিনোদনের সম্ভাবনময় জায়গা থাকলেও নেই সরকারি তেমন নজরদারী ও পৃষ্ঠপোষকতা।
জানা গেছে,মেহেরপুর জেলায় ছোটবড় চারটি বিনোদনের স্থান রয়েছে। একটি মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স, অনন্যা পার্ক, সদর উপজেলার আমঝুপি নীলকুঠি, ভাটপাড়া নীলকুঠি ডিসি ইকোপার্ক। এই চারটি স্থানই ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ। মেহেরপুর জেলার মানুষ অনেক বশী বিনোদন পিয়াসু। কিন্ত বিনোদনের জন্য তেমন কোন পর্যটন বা বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ২০১৭ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ নিজ উদ্যোগে ভাটপাড়া গ্রামের কতিপয় যুবক,স্থানীয় সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা,স্কুল শিক্ষক নিয়ে একটি ব্যাবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে নীলকুঠির ৩৩ একর জমিতে গড়ে তোলেন ইকোপার্ক। জেলা প্রশাসক বদলি হলে থমকে যায় পার্কের উন্নয়নকাজ। পার্কের সব কিছুই ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে। তবুও ঈদের দিন থেকে সপ্তাহ জুড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারনায় মুখরিত থাকে পার্কের অভ্যন্তর।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আজিজুল ইসলাম জানান, ঈদের বিনোদনের জন্য বিনোদনের স্থানগুলি পরিপুর্ণ হয়েছে। বিনোদন প্রিয় মানুষের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ প্রশাসন ও আনসার সদস্যরা কাজ করছে। স্ব-স্ব উপজেলা প্রশাসন নিরাপত্তায় কাজ করছে। আমি নিজেও কায়েকটি স্থান ঘুরে দেখেছি। সকলে নির্বিগ্নে চলাফেরা করছে।