প্রিন্স আরিফ খান, মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি: মেহেরপুরের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পার হলেও জেলার সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান করা হয়নি। প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় ৬ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও ৫ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নেয়া হয়নি শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ। প্রতি বছরের ২১শে ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে বিপাকে পরতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এর কারণ হিসেবে সরকারি তহবিল বরাদ্দ না থাকা ও ম্যানেজিং কমিটির অবহেলাকে দায়ী করছেন কর্তৃপক্ষ।
আর মাত্র দুইদিন পর একুশে ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস। শিক্ষার্থীরা জানতে পারছে না দিবসটির সঠিক তাৎপর্য ফলে জানাতে পারছেনা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা।
দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম হলেও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বেশ বড় সংখ্যার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ এবং মাদ্রাসা সব মিলে ৬ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই। ফলে ইচ্ছা থাকলেও শহীদ মিনারের অভাবে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী, নাঈম, সেঁজুতি ও মাজহারুল জানায়, তাদের স্কুলের শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার না থাকায় তারা ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেনা। তাদের দাবি সরকারি উদ্যোগে তাদের স্কুলে যেন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। একই কথা জানিয়েছে ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী, স্নেহারানী, সুরাইয়া ও ওয়ালিদ।
একইভাবে এইচ,এম,এইচ,ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জিনিয়া, সুমাইয়া ও ইতিয়ারা জানায়, তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২শ’৮০ জন শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষকবৃন্দ রয়েছে। স্কুল আঙ্গিনায় শহীদ মিনার না থাকায় তারা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারেনা। তাদের দাবি সরকার যাতে তাদের স্কুলটিতে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেয়। একই কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জেসমিন, ফাতেমা ও রিমা।
এইচ,এম,এইচ,ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল হালিম জানান, গাংনী উপজেলায় ১০-১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকী সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভাষা শহীদের ইতিহাস, তাৎপর্য ও সম্মান জানাতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ দরকার।
একইভাবে দাবী করেন গাংনী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক পারভেজ সাজ্জাদ রাজা। তিনি আরো জানান, স্কুল আঙ্গিনায় শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে যেতে হয় যা শিক্ষক -শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটাই কষ্টের।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো: মাহফুজুল হোসেন জানান, মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব আয় দিয়ে শহীদ মিনার নির্মান করার জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।