মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ মেহেরপুর শহরের তাঁতীপাড়ায় সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসেন (৩৭) ওৎপেতে থাকা দূর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২অক্টোবর-২০ইং) দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলা মেহেরপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড তাঁতীপাড়ায় এবং মেহেরপুর সদর থানার সন্নিকটে এ ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাবাসী জানতে পেরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহত ফারুক হোসেন মেহেরপুর শহর সমাজসেবা অফিসের মাঠ কর্মী এবং তাঁতীপাড়া সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে। তাঁর দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে নাহিদ (১২) এবং ছোট ছেলে নবাব (৫)।
তিনি ২০০৮ সালে মেহেরপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের রাধুনী হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তিতে বিভাগীয় পরীক্ষা দিয়ে মাঠ কর্মী হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।
ফারুক হোসেন এর আগে একবার মেহেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করেন। তিনি মাত্র কয়েক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হোন।
জানা যায়, রাত পোনে ১১ টার দিকে মেহেরপুর সদর থানা মোড়ের একটি দোকান থেকে মশার কয়েল কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির ঠিক ৫০/১০০ গজ পূর্বে কয়েকজন ওৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিছন দিক থেকে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ফারুকের ঘাড়, পিঠ ও পায়ে মারাত্বকভাবে ক্ষত এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। কিছুক্ষণ পরে স্থানীয়রা জানতে পেরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাবিবুর রহমান জানান, হাসপাতালে পৌছানোর আগেই তিনি মারা গেছেন। তার শরীরের ঘাড়ে, পিঠে এবং পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। যাতে গভির ক্ষত হয়েছে এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যূ হয়েছে ।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খান জানান, নিহতের বাড়ির ঠিক অদূরে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালিয়েছে। সুরতহাল রিপোর্টে পিঠে, ঘাড়ে এবং পায়ে কোপানো হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ হত্যার কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানান, ঘটনা জানতে পেরেই পুলিশ সুপার স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের একাধিক দল ইতিমধ্যে অভিযানে নেমেছে।
নিহত ফারুক হোসেনের বড় মামা আলাউদ্দিন বলেন, আমার ভাগনা ফারুকে মেরে ফেলার মত কোন বিরোধ কারোর সাথে ছিল তা আমাদের জানা নেই। মেহেরপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ আবু আবদুল্লাহ বাপ্পি বলেন, ফরুককে কুপানোর খবর পেয়ে ছুটে হাসপাতালে গিয়ে দেখি মারা গেছে। ফারুকের কোন শত্রু থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে না। তবে আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও সুবিচার দাবি করছি।
পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম মুরাদ আলী হাসপাতালে পরিদর্শন করে লাশের স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের প্রাথমিক ব্রিফ দেন এসময় তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে হত্যার তেমন কোন কারণ এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে বোঝা যাবে।