জেমস আব্দুর রহিম রানা যশোর জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ আসন্ন তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যশোর বাঘারপাড়া ও মণিরামপুরে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত দুই ইউনিয়নে যারা নৌকা প্রতীক পেয়েছেন তারা দুজন রাজাকার পুত্র বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা হলেন, বাঘারপাড়া উপজেলার ৩ নং রায়পুর ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেন অন্যজন মনিরামপুরের ১১ নং চালুয়াহাটি ইউনিয়নের আবুল ইসলাম। রাজাকার পুত্রদের নৌকা প্রতীক দেয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে দলের তৃণমূলে।শনিবার (২৩ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড বরাবর পৃথক দুটি দরখাস্তের মাধ্যমে তাদের মনোনয়ন বাতিলের জন্য স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণসহ তৃণমুল আওয়ামী লীগের নেতারা আবেদন জানিয়েছেন।শুক্রবার বিকাল ৪ টা থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের মুলতবি সভায় যশোরের তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু প্রার্থীদের মধ্যে বাঘারপাড়া উপজেলার ৩ নং রায়পুর ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেন ও অন্যজন মনিরামপুরের ১১ নং চালুয়াহাটি ইউনিয়নের আবুল ইসলাম এই দুইজন রাজাকার পুত্র বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল হইচেই শুরু হয়েছে।তথ্যানুসারে জানা যায়, বাঘারপাড়া উপজেলার ৩ নং রায়পুর ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেন রাজাকার ও পিচ কমিটির চেয়ারম্যান মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র। অন্যদিকে মনিরামপুরের ১১নং চালুয়াহাটি ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামের দিনু রাজাকারের ছেলে আবুল ইসলাম নৌকা প্রতীকে মনোনীত হয়েছেন। যদিও আবুল ইসলাম ও বিল্লাল হোসেন নিজেদেরকে প্রকৃত আওয়ামী লীগ দাবি করে এ প্রতিবেদক বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ষড়যন্ত্র।এ দুই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে স্থানীয়রা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর উক্ত রাজাকার পুত্রদের মনোনয়ন বাতিলের জোর দাবি করেছেন। একই সঙ্গে অনেকে নানা ভাষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপক আবুল হাসান ও যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম মিলন স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধাদের স্বাক্ষর সম্বলিত আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড বরাবর একটি আবেদনে উল্লেখ করেছেন নৌকা প্রতীক প্রাপ্ত আবুল ইসলাম মনিরামপুরের ১১নং চালুয়াহাটি ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামের দিনু রাজাকারের ছেলে। তারা অভিযোগে বলেছেন, তাকে মনোনীত করায় মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ জনতার মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তার আবুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিলের অনুরোধ করেছেন।অন্যদিকে, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এফ এম আশরাফুল কবির (ইঞ্জি. বিপুল ফারাজী) ইউনিয়নের ১৭ জন জীবিত বীরমুক্তিযোদ্ধাদের স্বাক্ষরসহ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড বরাবর আবেদন করেছে।বাঘারপাড়া উপজেলার ৩নং রায়পুর ইউনিয়নে চিহ্নিত রাজাকার ও পিচ কমিটির চেয়ারম্যান মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও আলবদর বাহিনীর কমান্ডার কটা মোশারেফের আপন ছোট ভাই বিল্লাল হোসেন। তাকে দেয়া দলীয়ভাবে মনোনীত করায় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ মর্মাহত হয়েছেন। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন ইমেজ সংকটে পড়বে। তাই রাজাকার পুত্র বিল্লাল হোসেনের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে প্রার্থনা জানিয়েছেন।উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ নভেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ নভেম্বর। ভোট গ্রহণ হবে ২৮ নভেম্বর।
৪ views