সুমন হোসেন, যশোর জেলা প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ করোনা পরিস্থিতি খারাপ হয়ে ওঠায় বুধবার রাত ১২টা থেকে পরবর্তী সাতদিন যশোর পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে জেলা প্রশাসন।সিভিল সার্জন জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে সোমবার যশোরের দুশ’ ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে একশ’ তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।যশোর পৌরসভায় করোনা পরিস্থিতি খারাপ হয়ে উঠায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার রাতে জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে যশোর জেলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বুধবার (আজ) রাত ১২টা থেকে সাত দিনের জন্য যশোর পৌর এলাকায় সার্বিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছেঃ
১. রোগী পরিবহনকারী/অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য বহনকারী ট্রাক ও জরুরি সেবাদানের জন্য ব্যবহৃত পরিবহন ছাড়া সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
২. ওষুধের দোকান ছাড়া সকল প্রকার দোকান ও শপিংমল বন্ধ থাকবে।
৩. কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় (মুদিখানা) পণ্যের দোকানপাট, খাবারের দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে। তবে, হোটেল, রেস্তোরাঁয় ভোর ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি/সরবরাহ করা যাবে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ এসব স্থানে জনসমাগম করতে পারবে না।
৪. জরুরি প্রয়োজনে সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে।
৫. রিকশায় একজন, অটোরিকশায় দু’জন এবং মোটরসাইকেলে শুধু চালক যাতায়াত করতে পারবেন।
৬. শিল্পকারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শ্রমিকদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আনা-নেয়া করতে হবে।
৭. আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন-কৃষি উপকরণ, (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থলবন্দরসমূহের কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, গণমাধ্যম, বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাকসেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও যানবাহন এ নির্দেশনার বাইরে থাকবে।
৮. অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে যেতে পারবেন না।
৯. পর্যটনস্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
১০. জনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
১১. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুমার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশ গ্রহণ করতে পারবে।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের করোনা প্রতিরোধে জারি করা নির্দেশনা বাস্তবায়নে বুধবার সকাল থেকেই যশোর শহরে প্রচার মাইক বের করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক মাইকে পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। একইসাথে কেউ এসব নির্দেশনা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
১১৩ views