মোঃ সাকিব চৌধুরী, রংপুর জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ মাঘের শীতের প্রকোপের মধ্যে অসময়ে টানা বৃষ্টিতে রংপুরের আলু ও সরিষা ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় ফসল নষ্টের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।শুক্রবার ভোর থেকে শুরু করে শনিবার সকাল পর্যন্ত রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হয়েছে, এর মধ্যে রংপুরে সর্বোচ্চ ৫৫ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুর আবহাওয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান।শনিবার সকালে সরজমিনে দেখা যায়, ঠান্ডার মধ্যেই কৃষকরা আলু ক্ষেতের পানি বের করে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সব আলুর ক্ষেতেই পানি জমে আছে। একই অবস্থা সরিষা ক্ষেতেরও।বালাকুমার এলাকার হাফিজুল ইসলাম সকাল থেকেই ক্ষেতের পানি সরাতে কাজ করছেন। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভাই তিন একর জমিতে আলু চাষ করছি। আর কয়েকদিন গেলেই আলু তোলা যাবে।
হঠাৎ বৃষ্টি জমিতে পানি জমে আছে।এই পানি যদি চার-পাঁচ দিন জমে থাকে তাহলে আলু পচে যাবে। কী করে পানি বের করে দিব তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি, যোগ করেন হাফিজুল।চিলমন এলাকার মোতাওয়াকেল হোসেন বলেন, আলুর জমিতে বোরো ধান লাগানোর জন্য বীজতলা তৈরি করে ধানের বীজ ফেলেছি। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টির কারণে বীজতলা ডুবে গেছে। তাই পানি বালতি দিয়ে তুলে ফেলছি। না হলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে।অসময়ের এই বৃষ্টিতে আলু ও বোরোর বীজতলার প্রচুর ক্ষতি হবে বলে ধারণা করছেন ময়নাকুটি এলাকার আলুচাষি মুরাদ হেসেন।তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিচু জায়গায় বোরোর বীজতলা তৈরি করেছি, সেটি ডুবে গেছে। ফলে বোরো ধান রোপণ নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। সেই জমিতে পানি জমে গেছে। আলু তোলার সময় এই বৃষ্টিতে বিশাল ক্ষতি হয়ে গেল। জমিতে পানি জমায় আলু পচে যাবে। বৃষ্টির কারণে সরিষাও মাটিতে পড়ে গেছে।মানুষের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে জওড়ারহাট এলাকার মিজানুর রহমান মিজান মিয়া চার একর জমিতে আলু আবাদ করছেন। মাঘ মাসের হঠাৎ বৃষ্টির কারণে আলুর জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে এই কৃষকের।রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে আলু ও সরিষার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যেসব আলু হারভেস্ট করার পর্যায়ে এসেছে সেগুলোর সমস্যা হবে।এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে আলু চাষীদের পানি বের করে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে, যোগ করেন ওবায়দুর রহমান।রংপুর আবহাওয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭০ শতাংশ।
৬ views