এস,এম শাহাদৎ হোসাইন গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় চৌবাচ্চায় রঙিন মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে সোনালী জীবন যাপন করছেন। পলাশবাড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জিরাই গ্রামের সাজু মিয়ার পুত্র শেখ আসাদুজ্জামান বিপ্লব চৌবাচ্চায় রঙিন মাছ চাষ করে বেকারত্ব দুর করে নিজের ভাগ্য বদলে সক্ষম হয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত জিরাই গ্রামে এ্যাকুয়া ফিশ ল্যান্ড নামের এ ফিশারির পুকুরে ১৩ জাতের ৩৬ প্রজাতির আকর্ষনীয় এবং বর্ণালী রঙিন মাছের চাষ হচ্ছে। খামারের উল্লেখযোগ্য প্রজাতির মাছগুলো হলো মলি, গাপ্পি, প্লাটি, সোর্ডটেইল, জাপানী কইকার্প, বাটারফ্লাই কইকার্প, গোল্ডফিশ, এঞ্জেল, ফাইটার, জেব্রা দানিয়া, গোড়ামি, কমেট প্রমুখ। জানা যায়, আসাদুজ্জামান বিপ্লব এসএসসি পাশ করার পর বাবার সাথে অভিমানে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। কাজের আশায় ঘুরেছেন বিভিন্ন স্থানে। খেয়ে না খেয়ে কেটেছে জীবনের অনেক দিন-অনেক রাত। সামান্য বেতনে চাকুরী করেছেন পোশাক কারখানায়। কাজ করেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। কিন্তু মনের মধ্যে লালিত হচ্ছিলো বড় কিছু করার স্বপ্ন, স্বাধীন কোন পেশা। খুঁজছিলেন নতুন, আলাদা ধরণের কোন ব্যবসার। ২০১৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বেড়াতে গিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী শহর বালুরঘাটে দেখতে পেলেন রঙিন মাছের (এ্যাকুয়ারিয়াম ফিশ) একটি খামার। যেখানে উৎপাদন করা রঙিন মাছ বিপণন হয় ভারতের বিভিন্ন এলাকায়। জেনে নিলেন চাষের পদ্ধতি, বাজারজাত করণের নিয়মসহ আনুষঙ্গিক নানা বিষয়। খুব সহজেই বেশ বড় আয়ের এমন একটি উৎস মনে দাগ কেটে গেল তার। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন শুরু করবেন এই ব্যবসা। সেদিনের স্বপ্নবাজ তরুণ, এখন একজন সফল উদ্যোক্তা। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের বিপ্লব বলেন দেশে ফিরে বাড়ির আঙিনায় ছোট্ট একটি চৌবাচ্চা তৈরী করে সামান্য কয়েকটি মাছের পোনা কিনে স্বল্প পরিসরে শুরু করলেন রঙিন মাছের চাষ। দু;বছরে আশাতীত সফলতা এনে দিল তাঁকে আরও আতœবিশ^াস। চাকুরী ছেড়ে ২০১৫ সালে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে বাড়ির পাশে দেড় বিঘা জমি লীজ নিয়ে গড়ে তুললেন রঙিন মাছের খামার। যেখানে মাছের ডিম থেকে রেনু ও পোনা উৎপাদন শুরু করেন তিনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ৫ বছরেই বিপ্লবের এ খামার আয়তনে যেমন বেড়েছে ও বৃদ্ধি হয়ে অর্থনৈতিক ভিত্তি। ৩৫ হাজার টাকার খামারে বর্তমানে মাছ রয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকার বেশি। খামারের ৩৪টি ট্যাঙ্কসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা। খামারের মধ্যে টিনের ছোট্ট চালা ঘরে ক¤িপউটার, ওয়াইফাইসহ ছোট ছোট নানা প্রকার যন্ত্রের ব্যবহার করা হচ্ছে। ৫ বছরে বিপ্লবের রঙিন মাছের খামারের মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। বিভিন্ন মা মাছ পালন, ডিম সংগ্রহ, রেনু উৎপাদন ও পরিচর্যার জন্য বর্তমানে স্বল্পপরিসরে সর্বাধুনিক যান্ত্রিক ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বিপ্লবের রঙ্গিন মাছের খামারে। রঙিন মাছের খামারটি জিরাই গ্রামের সবার কাছে এ্যাকুয়া ফিশ ল্যান্ড নামে পরিচিত।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]